World Bee Day
বিশ্ব মৌমাছি দিবস (World Bee Day)
আজ ২০ শে মে (20 May), বিশ্ব মৌমাছি দিবস (World Bee Day)। প্রতি বছর ২০ শে মে তারিখটি বিশ্ব মৌমাছি দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ১৭৩৪ সালের ২০ শে মে অ্যান্টন জানসা (Anton Janša) তৎকালীন কার্নিওলা (বর্তমান স্লোভেনিয়া)-তে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মৌমাছি পালনের পথিকৃৎ (Pioneer of Beekeeping) বা আধুনিক মৌমাছি পালনের প্রতিষ্ঠাতা (Founder of Modern Beekeeping) রূপে পরিচিত। ২০১৭ সালের ২০ শে ডিসেম্বর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ অ্যান্টন জানসার জন্মদিন অর্থাৎ ২০ শে মে তারিখটি বিশ্ব মৌমাছি দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। ২০১৮ সালের ২০ শে মে প্রথমবার বিশ্ব মৌমাছি দিবস পালিত হয়। বিশ্ব মৌমাছি দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : বাস্তুতন্ত্রে মৌমাছি এবং অন্যান্য পরাগায়নকারী (Pollinator) -এর ভূমিকাকে স্বীকৃতি প্রদান করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে বিশ্ব মৌমাছি দিবসের থিম হল : ‘Bee inspired by nature to nourish us all’।
মৌমাছি (Bee) হল আর্থ্রোপোডা (Arthropoda) পর্বের অ্যাপোইডি (Apoidea) মহাপরিবারের অন্তর্গত অ্যান্থোফিলা (Anthophila) গোষ্ঠীর পতঙ্গ। সারা পৃথিবীতে ২০ হাজারেরও বেশি প্রজাতির মৌমাছি রয়েছে। অধিকাংশ মৌমাছি প্রজাতি বাস্তুতন্ত্রে পরাগায়নকারী হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমস্ত মৌমাছি প্রজাতিকে ৭ টি পরিবারে বিভক্ত করা যায় — (১) অ্যানড্রেনিডি (Andrenidae) বা Mining Bee, (২) এপিডি (Apidae), (৩) কালেটিডি (Colletidae) বা Plasterer Bee/Polyester Bee, (৪) হালিকটিডি (Halictidae) বা Sweet Bee, (৫) মেগাচিলিডি (Megachilidae) বা Mason Bee বা Leafcutter Bee, (৬) মেলিটিডি (Melittidae) এবং (৭) স্টেনোট্রিটিডি (Stenotritidae)। উপরোক্ত ৭ টি পরিবারের মধ্যে, বৃহত্তম মৌমাছি পরিবার হল এপিডি (Apidae) এবং ক্ষুদ্রতম মৌমাছি পরিবার হল স্টেনোট্রিটিডি (Stenotritidae)। বিশ্বের বৃহত্তম মৌমাছি প্রজাতি হল মেগাচিলি প্লুটো (Megachile Pluto), যা রাজা ওফু (Raja Ofu) বা ওয়ালেসে’র দৈত্য মৌমাছি (Wallace’s Giant Bee) নামেও পরিচিত। এই প্রজাতির মৌমাছি ইন্দোনেশিয়াতে পাওয়া যায়। বিশ্বের ক্ষুদ্রতম মৌমাছি প্রজাতি হল পরী মৌমাছি (Fairy Bee), যার বৈজ্ঞানিক নাম পার্ডিটা মিনিমা (Perdita minima)। এই প্রজাতির মৌমাছি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতে পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, প্রাণীবিজ্ঞানের যে শাখাতে মৌমাছি সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন করা হয়, তাকে মেলিটোলজি (Melittology) বলে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মৌমাছি (বিশেষত মধু মৌমাছি) প্রতিপালন এপিকালচার (Apiculture) নামে পরিচিত। আন্টার্কটিকা ব্যতীত পৃথিবীর সকল মহাদেশেই মৌমাছি পাওয়া যায়। মৌমাছি এবং অন্যান্য পরাগায়নকারী প্রাণী স্থিতিশীল কৃষি ও পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য অপরিহার্য, যা ফল, শাকসবজি, বাদাম ও বীজ সহ বিশ্বব্যাপী ৭৫% -এরও বেশি ফসল উৎপাদন কার্যকর করে। কিন্তু বাসস্থান ধ্বংস, অস্থিতিশীল কৃষিকাজ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বর্তমানে মৌমাছি সহ পরাগায়নকারী প্রাণীরা বিপদগ্রস্ত। আন্তঃফসল চাষ (Intercropping), শস্যাবর্তন (Crop Rotation) ও কৃষি বনায়নের মতো কৌশল মৌমাছি সহ পরাগায়নকারীদের সহায়তা করে এবং খাদ্য নিরাপত্তা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সুনিশ্চিত করে।
Pingback: International Tea Day - ভূগোলিকা-Bhugolika