World Wildlife Day
বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবস (World Wildlife Day)
আজ ৩ রা মার্চ (3 March), বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবস (World Wildlife Day)। প্রতি বছর ৩ রা মার্চ তারিখটি বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য থেকে বিপন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীদের সুরক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে ১৯৭৩ সালের ৩ রা মার্চ কনভেনশন অন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন এন্ডেঞ্জার্ড স্পিসিস অফ ওয়াইল্ড ফনা অ্যান্ড ফ্লোরা (Convention on International Trade in Endangered Species of Wild Fauna and Flora) বহুপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা সংক্ষেপে ‘CITES‘ নামে পরিচিত। তারই স্মরণে, ২০১৩ সালের ২০ শে ডিসেম্বর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ ৩ রা মার্চ তারিখটি বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। ২০১৪ সালে প্রথমবার বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবস পালিত হয়। বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : উদ্ভিদ (Flora) এবং প্রাণী (Fauna) সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবসের থিম হল : ‘Wildlife Conservation Finance: Investing in People and Planet’।
উল্লেখ্য, প্রাকৃতিক বাসস্থানে সকল অনাবাদী উদ্ভিদ এবং অ-গৃহপালিত প্রাণীকে বন্যপ্রাণ (Wildlife) বলে। মানব দ্বারা উপস্থাপিত নয়, বন্য পরিবেশে জন্ম ও বৃদ্ধিপ্রাপ্ত সকল জীবসম্প্রদায় বন্যপ্রাণ নামে পরিচিত। বৃহত্তর অর্থে, মানব নির্মিত পরিবেশে বসবাসকারী অপোষ্য জীবদেরও বন্যপ্রাণের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বন্যপ্রাণের অন্তর্নিহিত মূল্য এবং স্থিতিশীল উন্নয়ন ও মানব কল্যাণে বন্যপ্রাণের পরিবেশগত, জেনেটিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক, শিক্ষাগত, সাংস্কৃতিক, বিনোদনমূলক এবং নান্দনিক সহ বিভিন্ন অবদান রয়েছে। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড (WWF) -এর ২০২০ সালের লিভিং প্ল্যানেট রিপোর্ট (Living Planet Report) অনুসারে, মানবীয় কর্মকান্ড (অতিরিক্ত ভোগ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নিবিড় কৃষিকাজ ইত্যাদি) -এর ফলে ১৯৭০ সাল থেকে বৈশ্বিক বন্যপ্রাণ সংখ্যা ৬৮% হ্রাস পেয়েছে। ইন্টারপোল (Interpol) -এর তথ্যমতে, প্রতি বছর ১০-২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অবৈধ বন্যপ্রাণ বাণিজ্য হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, ইউএনইপি/আইইউসিএন প্রোটেক্টেড প্ল্যানেট রিপোর্ট (UNEP/IUCN Protected Planet Report) অনুসারে, বর্তমানে (২০২১) পৃথিবীর পৃথিবীর স্থলভাগ ও অভ্যন্তরীণ জলজ বাস্তুতন্ত্রের ২২.৫ মিলিয়ন বর্গকিমি (১৬.৬৪%) এবং উপকূলীয় জলভাগ ও মহাসাগরের ২৮.১ মিলিয়ন বর্গকিমি (৭.৭৪%) এলাকা নথিভুক্ত সুরক্ষিত ও সংরক্ষিত রয়েছে। বন্যপ্রাণের সুরক্ষা ও সংরক্ষণ কেন গুরুত্বপূর্ণ? — (১) বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশে খাদ্যশৃঙ্খল এবং বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য রক্ষা করা যায়। (২) বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের মাধ্যমে বিলুপ্তপ্রায় ও বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণ, সামগ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা যায় এবং বন্যপ্রাণের আবাসস্থল রক্ষা করা যায়। (৩) বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রকৃতি-কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা যায়, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হয়। (৪) বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের মাধ্যমে বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর নিজস্ব পরিবেশে বিকাশ ও বিবর্তনের ধারা অব্যাহত থাকে। (৫) বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের মাধ্যমে জীবজগৎ সম্পর্কে অধ্যয়ন, গবেষণা ও জ্ঞান লাভ করা যায়।
Pingback: International Women's Day - ভূগোলিকা-Bhugolika