World Tsunami Awareness Day
বিশ্ব সুনামি সচেতনতা দিবস (World Tsunami Awareness Day)

আজ ৫ ই নভেম্বর (5 November), বিশ্ব সুনামি সচেতনতা দিবস (World Tsunami Awareness Day)। প্রতি বছর ৫ ই নভেম্বর তারিখটি বিশ্ব সুনামি সচেতনতা দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২২ শে ডিসেম্বর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ৫ ই নভেম্বর তারিখটি বিশ্ব সুনামি সচেতনতা দিবস রূপে পালিত হয়। ১৮৫৪ সালের ৫ ই নভেম্বর জাপানের হামাগুচি গোরিও (Hamaguchi Goryō) তাঁর গ্রাম হিরো (বর্তমান নাম : হিরোগাওয়া, হনশু দ্বীপ) -এর অধিবাসীদের আনসেই-নানকাই ভূমিকম্প (১৮৫৪)-জনিত সুনামি থেকে সতর্ক ও রক্ষা করেছিলেন। তাঁরই স্মরণে ৫ ই নভেম্বর তারিখটি বিশ্ব সুনামি সচেতনতা দিবস হিসাবে গৃহীত হয়। ২০১৬ সালে প্রথমবার বিশ্ব সুনামি সচেতনতা দিবস পালিত হয়। বিশ্ব সুনামি সচেতনতা দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : সুনামির ঝুঁকি সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি করা, সুনামি মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও পূর্ব সতর্কতা ব্যবস্থার প্রচার করা এবং সুনামিতে ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে বিশ্ব সুনামি সচেতনতা দিবসের থিম হল : ‘Be Tsunami Ready : Invest in Tsunami Preparedness’।
সুনামি (Tsunami) শব্দটি জাপানি শব্দ সু (Tsu) অর্থাৎ বন্দর (Harbour) এবং নামি অর্থাৎ ঢেউ (Wave) থেকে এসেছে। অর্থাৎ সুনামির আক্ষরিক অর্থ হল বন্দর বা উপকূল অঞ্চলে প্রবল সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস। সমুদ্রে কোনো কারণে বিশাল পরিমাণে জলের স্থানচ্যুতির ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে সৃষ্ট ধারাবাহিকভাবে একাধিক সুউচ্চ ঢেউ বা জলোচ্ছ্বাসকে সুনামি বলে। সুনামি সৃষ্টির কারণগুলি হল — সমুদ্রগর্ভে প্রবল ভূমিকম্প, ভূতাত্ত্বিক পাতের নড়াচড়া, আগ্নেয় উদগীরণ, সমুদ্রগর্ভে ভূমিধ্বস, সমুদ্রে বিশাল হিমবাহ ভাঙন, সমুদ্রে বৃহৎ উল্কাপাত, পারমাণবিক বিস্ফোরণ ইত্যাদি। উল্লেখ্য, সুনামি ‘ভূকম্পীয় সামুদ্রিক তরঙ্গ‘ (Seismic Sea Wave) নামেও পরিচিত। ঐতিহাসিক তথ্য অনুসারে, পৃথিবীর মোট সুনামির ৭০% প্রশান্ত মহাসাগরে, ১৫% ভূমধ্যসাগরে, ৯% ক্যারিবিয়ান সাগরে ও আটলান্টিক মহাসাগরে এবং ৬% ভারত মহাসাগরে সংঘটিত হয়েছে (সূত্র : NOAA)।
গত ১০০ বছরে (১৯২৫-২০২৫) মোট ৮৭ টি সুনামি ঘটেছে। সাধারণত ১০০ মিটারের অধিক উঁচু ঢেউযুক্ত সুনামি-কে মেগাসুনামি (Megatsunami) বলে। নথিবদ্ধকৃত ইতিহাস, পৃথিবীর সর্বাধিক উঁচু ঢেউযুক্ত সুনামি হল ১৯৫৮ সালের লিটুয়া উপসাগর মেগাসুনামি (Lituya Bay Megatsunami), যার ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল ৫২৪ মিটার। নথিবদ্ধকৃত ইতিহাসে, পৃথিবীর সবচেয়ে মারাত্মক সুনামি (Deadliest Tsunami) হল ২০০৪ সালের ভারত মহাসাগর সুনামি (Indian Ocean Tsunami), যার ফলে এশিয়া ও আফ্রিকার ১৪ টি দেশে ২,২৭,৮৯৮ জন মানুষের মৃত্যু হয়। গত ৫০ বছরে (১৯৭৫-২০২৫) কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সুনামি হল — ১৯৭৬ সালে ফিলিপিন্সের মোরো উপসাগর সুনামি (Moro Gulf Tsunami), ১৯৯২ সালে ইন্দোনেশিয়ার ফ্লোরেস সুনামি (Flores Tsunami), ১৯৯৮ সালের পাপুয়া নিউগিনি সুনামি (Papua New Guinea Tsunami), ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগর সুনামি (Indian Ocean Tsunami), ২০১১ সালে জাপানের তোহোকু সুনামি (Tohoku Tsunami), ২০১৮ সালে সুলাওয়েসি সুনামি (Sulawesi Tsunami) ইত্যাদি।
Pingback: National Cancer Awareness Day - ভূগোলিকা-Bhugolika