World Ozone Day
বিশ্ব ওজোন দিবস (World Ozone Day)
আজ ১৬ ই সেপ্টেম্বর (16 September), বিশ্ব ওজোন দিবস (World Ozone Day), যা আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সংরক্ষণ দিবস (International Day for the Preservation of the Ozone Layer) নামেও পরিচিত। প্রতি বছর ১৬ ই সেপ্টেম্বর তারিখটি আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সংরক্ষণ দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালের ১৬ ই সেপ্টেম্বর ওজোন স্তর সংরক্ষণে মন্ট্রিল চুক্তি (Montreal Protocol) স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তারই স্মরণে, ১৯৯৪ সালের ১৯ শে ডিসেম্বর তারিখে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ১৬ ই সেপ্টেম্বর তারিখটি আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সংরক্ষণ দিবস হিসাবে গৃহীত হয়। ১৯৯৫ সালের ১৬ ই সেপ্টেম্বর তারিখে প্রথমবার আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সংরক্ষণ দিবস পালিত হয়। আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সংরক্ষণ দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : ওজোন স্তরের ক্ষয়, পৃথিবীর জীবকুলের উপর ওজোন স্তর ক্ষয়ের ক্ষতিকারক প্রভাব এবং পৃথিবীর সুরক্ষায় ওজোন স্তর রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সংরক্ষণ দিবসের থিম হল : ‘From science to global action’।
ওজোন (O₃) হল এক হালকা নীল, তীব্র গন্ধযুক্ত গ্যাস। ওজোন হল প্রকৃতপক্ষে অক্সিজেনের এক রূপভেদ এবং তিনটি অক্সিজেন পরমাণু নিয়ে গঠিত বলে ওজোন ট্রাইঅক্সিজেন (Trioxygen) নামেও পরিচিত। ১৮৪০ সালে বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান ফ্রেডরিক স্কোনবি (Christian Friedrich Schönbein) ওজোন গ্যাস (Ozone Gas) আবিষ্কার করেন। বায়ুমন্ডলে নিম্ন স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৫-৩৫ কিমি উচ্চতায় ওজোন গ্যাসের সর্বাধিক কেন্দ্রীভবন দেখা যায়, যা ওজোন স্তর (Ozone Layer) নামে পরিচিত। ১৯১৩ সালে বিজ্ঞানী চার্লস ফ্যাব্রি (Charles Fabry) এবং হেনরি বুসন (Henri Buisson) বায়ুমন্ডলে ওজোন স্তর (Ozone Layer) আবিষ্কার করেন। ১৯২৪ সালে বিজ্ঞানী গর্ডন ডবসন (Gordon Dobson) বায়ুমন্ডলে ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব পরিমাপের জন্য ডবসন স্পেকট্রোফোটোমিটার (Dobson Spectrophotometer) যন্ত্র আবিষ্কার করেন। তাঁরই নাম অনুসারে, ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব পরিমাপের একক ডবসন একক (Dobson Unit) নামে পরিচিত।
উল্লেখ্য, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব পৃথিবীর নিরক্ষীয় অঞ্চলে সর্বনিম্ন এবং মেরু অঞ্চলে সর্বাধিক। বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তরের কোনো স্থানে যদি ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব ২২০ ডবসন এককের কম হয়, তখন তাকে ওজোন গহ্বর (Ozone Hole) বলে। ব্রিটিশ আন্টার্কটিক সার্ভের বিজ্ঞানীরা ১৯৭০ -এর দশকের শেষভাগে ওজোন ক্ষয় (Ozone Depletion) সম্পর্কে গবেষণা শুরু করেন এবং আন্টার্কটিকার হ্যালি বে গবেষণা কেন্দ্রে বিজ্ঞানী জোসেফ চার্লস ফারম্যান (Joseph Charles Farman), ব্রায়ান জেরার্ড গার্ডিনার (Brian Gerard Gardiner) ও জোনাথন শাঙ্কলিন (Jonathan Shanklin) প্রথম ওজোন গহ্বর (Ozone Hole) আবিষ্কার করেন, যা ১৯৮৫ সালে নেচার পত্রিকাতে প্রথম প্রকাশিত হয়। প্রাকৃতিক উপায়ে আলোক রাসায়নিক বিক্রিয়াতে ওজোন গ্যাসের বিনাশ ঘটে। তবে মানবীয় কর্মকান্ডে উৎপাদিত বিভিন্ন গ্যাস (যেমন — CFC, HCFC, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ওজোন স্তরের পক্ষে ক্ষতিকারক। ওজোন স্তর সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি থেকে পৃথিবীর জীবকুলকে রক্ষা করে। তাই এটি প্রাকৃতিক সৌরপর্দা নামে পরিচিত।
Pingback: International Day of Peace - ভূগোলিকা-Bhugolika