World Malaria Day
বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস (World Malaria Day)
আজ ২৫ শে এপ্রিল (25 April), বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস (World Malaria Day)। প্রতি বছর ২৫ শে এপ্রিল তারিখটি বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ২৫ শে এপ্রিল নাইজেরিয়ার আবুজা শহরে দ্য আফ্রিকান সামিট অন রোল ব্যাক ম্যালেরিয়া (The African Summit on Roll Back Malaria) অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে প্রকাশিত আবুজা ঘোষণা (Abuja Declaration) অনুসারে, ২৫ শে এপ্রিল তারিখটি আফ্রিকা ম্যালেরিয়া দিবস (Africa Malaria Day) হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ২০০১ সালের ২৫ শে এপ্রিল প্রথমবার আফ্রিকা ম্যালেরিয়া দিবস পালিত হয়। ২০০৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর ৬০-তম সাধারণ অধিবেশনে ২৫ শে এপ্রিল তারিখটি বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ২০০৮ সালের ২৫ শে এপ্রিল প্রথমবার বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস পালিত হয়। বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : বিশ্বব্যাপী ম্যালেরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করা এবং ম্যালেরিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসের থিম হল : ‘Malaria Ends With Us: Reinvest, Reimagine, Reignite’।
ম্যালেরিয়া (Malaria) হল একপ্রকার মশাবাহিত সংক্রামক ও প্রাণঘাতী রোগ। ম্যালেরিয়া শব্দটি ইতালীয় শব্দ ম্যাল (Mal) অর্থাৎ দূষিত এবং এরিয়া (Aria) অর্থাৎ বায়ু থেকে এসেছে। ম্যালেরিয়া শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল দূষিত বায়ু। শুধুমাত্র স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা (Female Anopheles Mosquito) ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করে এবং এই মশার কামড়ের মাধ্যমে ম্যালেরিয়া রোগ ছড়িয়ে পড়ে। উল্লেখ্য, ১৮৯৭ সালে রোনাল্ড রস (Ronald Ross) ম্যালেরিয়ার বাহক হিসাবে স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশাকে চিহ্নিত করেন। মানবদেহে ম্যালেরিয়া রোগের প্রধান লক্ষণগুলি হল— জ্বর, ক্লান্তি, বমি ও মাথাব্যথা। প্রকৃতপক্ষে, ম্যালেরিয়ার কারণ হল স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশাবাহিত প্লাজমোডিয়াম (Plasmodium) নামক একপ্রকার অণুজীব গোষ্ঠী। এই অণুজীব মশার মানবদেহে প্রবেশ করে যকৃৎ ও লোহিত রক্তকণিকাকে আক্রান্ত করে। প্লাজমোডিয়ামের প্রধানত ৫ টি প্রজাতি (P. falciparum, P. vivax, P. knowlesi, P. ovale, P. malariae) মানবদেহকে সংক্রামিত করে। এর মধ্যে সর্বাধিক ভয়ংকর প্রজাতিটি হল প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম (Plasmodium falciparum), যার কারণে ম্যালেরিয়া-ঘটিত সর্বাধিক মৃত্যু ঘটে। উল্লেখ্য, ১৮২০ সালে দুই ফরাসি গবেষক পিয়ের-জোসেফ পেলেটিয়ার (Pierre-Joseph Pelletier) এবং জোসেফ বিয়েঁনইমে কাভাঁতু (Joseph Bienaimé Caventou) সিঙ্কোনা গাছের ছাল থেকে ম্যালেরিয়ার ওষুধ কুইনাইন (Quinine) আবিষ্কার করেন।
ম্যালেরিয়া রোগ প্রধানত এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে দেখা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) -এর তথ্য অনুসারে, বিশ্বের মোট ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্তের ৯৪% এবং ম্যালেরিয়া-ঘটিত মৃত্যুর ৯৫% সাব-সাহারান আফ্রিকা-তে ঘটেছে। ম্যালেরিয়া রোগ প্রভাবিত দেশগুলি হল — নাইজেরিয়া, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, নাইজার, তানজানিয়া, উগান্ডা ইত্যাদি। ২০২৩ সালে সারা বিশ্বে ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২৬.৩ কোটি এবং ম্যালেরিয়ার কারণে ৫.৯৭ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের গুরুত্বপূর্ণ উপায়গুলি হল — মশার কামড় থেকে বাঁচতে মশারি ব্যবহার করা, মশা তাড়াতে কীটনাশক স্প্রে ব্যবহার করা এবং মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করা।
Pingback: International Dance Day - ভূগোলিকা-Bhugolika