World Environment Day
বিশ্ব পরিবেশ দিবস (World Environment Day)
আজ ৫ ই জুন (5 June), বিশ্ব পরিবেশ দিবস (World Environment Day)। প্রতি বছর ৫ ই জুন তারিখটি বিশ্ব পরিবেশ দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের ৫ থেকে ১৬ ই জুন তারিখে সুইডেনের স্টকহোম শহরে রাষ্ট্রসংঘ মানব পরিবেশ সম্মেলন (United Nations Conference on the Human Environment) অনুষ্ঠিত হয়, যা স্টকহোম সম্মেলন (Stockholm Conference) নামেও পরিচিত। এই সম্মেলনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব গৃহীত হয়। ১৯৭২ সালের ১৫ ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ ৫ ই জুন তারিখটি বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। ১৯৭৩ সালে প্রথমবার বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়। বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : পরিবেশগত সমস্যা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি করা, পরিবেশ রক্ষার জন্য ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত পদক্ষেপকে উৎসাহিত করা এবং স্থিতিশীল অনুশীলনগুলিকে উৎসাহিত করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের থিম হল : ‘Ending Plastic Pollution’।
পরিবেশ (Environment) বলতে প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট সবকিছুকে বোঝায়, যা কোনো জীব বা মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে। পরিবেশ হল চারিপাশের ভৌত অবস্থা, জলবায়ু এবং অন্যান্য জীব ও জৈব উপাদানগুলির সমষ্টি। ‘Environment’ অর্থাৎ পরিবেশ শব্দটি জার্মান শব্দ ‘Environ’ (En অর্থাৎ মধ্যে এবং Viron অর্থাৎ পরিবেষ্টন) থেকে এসেছে, যার অর্থ হল পরিবেষ্টনকারী পারিপার্শ্বিক অবস্থা। অক্সফোর্ড ডিকশনারি অনুসারে, পরিবেশ হল উদ্ভিদ ও প্রাণী জগতের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী বহিরঙ্গের অবস্থাগুলির সমষ্টি। জীবের জন্ম, বৃদ্ধি ও অস্তিত্ব রক্ষার সহায়ক জৈব, অজৈব ও সাংস্কৃতিক উপাদানগুলি পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ায় যে পারিপার্শ্বিক অবস্থা গড়ে ওঠে তাকে পরিবেশ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, জীব অর্থাৎ উদ্ভিদ ও প্রাণী তাদের জীবনচক্রের যেকোনো সময়ে যে সমস্ত জৈব ও অজৈব কারণগুলি দ্বারা প্রভাবিত হয়, সেই কারণগুলির সমষ্টিকে পরিবেশ বলে। অর্থাৎ স্থান ও কালের কোনো প্রদত্ত বিন্দুতে যেসব অবস্থা মানুষকে পরিবেষ্টন করে রাখে, তাদের সমষ্টিগত অবস্থাকে পরিবেশ বলে। প্রকৃতিগত পার্থক্য ও মৌলিক গঠন অনুসারে পরিবেশ প্রধানত দুই প্রকার — প্রাকৃতিক পরিবেশ (Physical Environment) ও মানবসৃষ্ট পরিবেশ বা সামাজিক পরিবেশ (Manmade Environment / Social Environment)।
প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদানগুলি হল তিন প্রকার — জৈব বা সজীব উপাদান (যেমন : উদ্ভিদ, প্রাণী, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি), অজৈব বা জড় উপাদান (যেমন : জল, বায়ু, মৃত্তিকা ইত্যাদি) এবং ভৌত উপাদান (যেমন : আলো, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ইত্যাদি)। মানবসৃষ্ট বা সামাজিক পরিবেশের উপাদানগুলি হল — পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মী, পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী, আর্থিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, কৃষি ও শিল্প, রাজনীতি, স্থাপত্য, আবাসন ইত্যাদি। পরিবেশ সংরক্ষণ অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্বগুলি হল — (১) পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য রক্ষা করা যায়। (২) পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করা যায়। (৩) পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা যায়। (৪) পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সুরক্ষার উন্নতিসাধন করা যায়। (৫) পরিবেশ সংরক্ষণের মাধ্যমে স্থিতিশীল উন্নয়ন সুনিশ্চিত করা যায়।
Pingback: Russian Language Day - ভূগোলিকা-Bhugolika