World Elephant Day
বিশ্ব হাতি দিবস (World Elephant Day)
আজ ১২ ই আগস্ট (12 August), বিশ্ব হাতি দিবস (World Elephant Day)। প্রতি বছর ১২ ই আগস্ট তারিখটি বিশ্ব হাতি দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ২০০২ সালে থাইল্যান্ডের রাণী সিরিকিত (Sirikit) -এর উদ্যোগে এলিফ্যান্ট রিইন্ট্রোডাকশন ফাউন্ডেশন (Elephant Reintroduction Foundation) স্থাপিত হয়। ২০১১ সালে কানাডিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা পাট্রিসিয়া সিমস্ (Patricia Sims) ও মাইকেল ক্লার্ক (Michael Clark) এবং এলিফ্যান্ট রিইন্ট্রোডাকশন ফাউন্ডেশন সংস্থার উদ্যোগে বিশ্ব হাতি দিবস পালনের কর্মসূচি গৃহীত হয়। ২০১২ সালের ১২ ই আগস্ট প্রথমবার বিশ্ব হাতি দিবস পালিত হয়। বিশ্ব হাতি দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : বিশ্ব জুড়ে হাতিদের সংরক্ষণ ও সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা। বিশ্ব হাতি দিবস পালনের লক্ষ্য হল আফ্রিকান ও এশিয়ান হাতিদের দুরাবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা এবং বন্দী ও বন্য হাতিদের উন্নত যত্ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য ইতিবাচক সমাধানের ব্যবস্থা করা।
হাতি (Elephant) হল স্তন্যপায়ী (Mammalia) শ্রেণীর প্রোবোসিডিয়া (Proboscidea) বর্গের এলিফ্যান্টিডাই (Elephantidae) পরিবারের অন্তর্গত একপ্রকার তৃণভোজী প্রাণী। পৃথিবীর বৃহত্তম জীবিত স্থলচর প্রাণী (World’s Largest Living Land Animal) হল হাতি। বর্তমানে হাতির তিনটি জীবিত প্রজাতি হল — (১) আফ্রিকান অরণ্য হাতি (African Forest Elephant), যার বৈজ্ঞানিক নাম লক্সোডন্টা সাইক্লোটিস (Loxodonta cyclotis) (২) আফ্রিকান গুল্ম হাতি (African Bush Elephant), যার বৈজ্ঞানিক নাম লক্সোডন্টা আফ্রিকানা (Loxodonta africana) এবং (৩) এশিয়ান হাতি (Asian Elephant), যার বৈজ্ঞানিক নাম এলিফাস ম্যাক্সিমাস (Elephas maximus)। এদের মধ্যে বৃহত্তম প্রজাতি (Largest Species) হল আফ্রিকান গুল্ম হাতি। উল্লেখ্য, এশিয়ান হাতির ৩ টি স্বীকৃত উপপ্রজাতি (Subspecies) রয়েছে। যথা — (১) শ্রীলঙ্কান হাতি (Sri Lankan Elephant), যার বৈজ্ঞানিক নাম এলিফাস ম্যাক্সিমাস ম্যাক্সিমাস (Elephas maximus maximus) (২) ভারতীয় হাতি (Indian Elephant), যার বৈজ্ঞানিক নাম এলিফাস ম্যাক্সিমাস ইন্ডিকাস (Elephas maximus indicus) এবং (৩) সুমাত্রান হাতি (Sumatran Elephant), যার বৈজ্ঞানিক নাম এলিফাস ম্যাক্সিমাস সুমাত্রানাস (Elephas maximus sumatranus)। এদের মধ্যে বৃহত্তম উপপ্রজাতি (Largest Subspecies) হল শ্রীলঙ্কান হাতি।
বর্তমানে হাতির প্রধান আবাসস্থল হল সাব-সাহারান আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। দীর্ঘ শুঁড়, গজদন্ত, বড় কর্ণপর্দা, স্তম্ভাকৃতি চারটি পা এবং ধূসর বর্ণের শক্ত অথচ সংবেদনশীল চামড়া হাতির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। WWF -এর তথ্য অনুসারে, বর্তমানে বন্য পরিবেশে ৪,১৫,০০০ আফ্রিকান হাতি এবং ৪০,০০০-৫০,০০০ এশিয়ান হাতি রয়েছে। বিশ্বে আনুমানিক ১৫,০০০-২০,০০০ হাতি বন্দী অবস্থায় রয়েছে। আফ্রিকার বৎসোয়ানা-তে বন্য পরিবেশে সর্বাধিক সংখ্যক হাতি রয়েছে। ভারতে সর্বাধিক সংখ্যক এশিয়ান হাতি রয়েছে। IUCN -এর তথ্য অনুসারে, আফ্রিকান অরণ্য হাতি মহাবিপন্ন (Critically Endangered) এবং আফ্রিকান গুল্ম হাতি ও এশিয়ান হাতি বিপন্ন (Endangered) প্রজাতির তালিকায় রয়েছে। আবাসস্থল ধ্বংস ও খন্ডীকরণ, চোরাশিকার, মানব-হাতি সংঘর্ষ প্রভৃতি কারণে বন্য পরিবেশে হাতির সংখ্যা ক্রমহ্রাসমান। হাতি একটি কিস্টোন প্রজাতি (Keystone Species)। তাই, হাতির সংরক্ষণ ও সুরক্ষা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।