Sunday, June 8, 2025

ভূগোলিকা-Bhugolika

ভূগোল শিক্ষার অনন্য প্রতিষ্ঠান

ভূগোলিকা-Bhugolika

ভূগোল শিক্ষার অনন্য প্রতিষ্ঠান

ভূগোল বিচিত্রা

Topic – Hotspot

প্রসঙ্গ – তপ্তবিন্দু (Topic – Hotspot)

আপনাকে ভূগোলিকা-Bhugolika -এর ‘ভূগোল বিচিত্রা’ বিভাগে স্বাগত জানাই। আজকের পোস্ট : প্রসঙ্গ – তপ্তবিন্দু (Topic – Hotspot)।

▶️▶️▶️ পৃথিবীর অধিকাংশ আগ্নেয় কার্যকলাপ ভূতাত্ত্বিক পাতের প্রান্তভাগে হলেও, এক উল্লেখযোগ্য অংশে ভূতাত্ত্বিক পাতগুলির অন্তঃদেশে সংঘটিত হয়। ভূতাত্ত্বিক পাতগুলির অন্তঃদেশে আগ্নেয়োচ্ছাসের কেন্দ্রগুলি তপ্তবিন্দু বা হটস্পট (Hotspot) নামে পরিচিত। পৃথিবীর কেন্দ্রমন্ডল (Core) -এর সংস্পর্শে থাকা নিম্ন গুরুমন্ডল (Lower Mantle) থেকে পরিচলন প্রক্রিয়ায় ম্যাগমা উর্দ্ধ গুরুমন্ডল (Upper Mantle)-এর যেখানে উঠে আসে, সেখানে তপ্তবিন্দু সৃষ্টি হয়। বস্তুত, তপ্তবিন্দু হল ম্যান্টল প্লিউম (Mantle Plume)-এর পৃষ্ঠীয় অবস্থান (Surface Manifestation)। ভূ-ত্বকের গভীরে যেসব স্থানের উষ্ণতা পার্শ্ববর্তী অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি, তাদের তপ্তবিন্দু বা হটস্পট (Hot Spot) বলে। ভূতাত্ত্বিকদের মতে, তপ্তবিন্দু (Hotspot) হল প্রকৃতপক্ষে ম্যাগমা-লাভা নিঃসরণ বিন্দু, যা কোনো ভূতাত্ত্বিক পাতের অন্তঃদেশে (কখনো কখনো পাত সীমানাতে) দেখা যায়। অন্যভাবে বলা যায়, ভূ-ত্বকে প্রতিনিয়ত ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা নিঃসরণকারী বিন্দুকে তপ্তবিন্দু (Hotspot) বলে। ১৯৫৮ সালে অস্ট্রেলিয়ান ভূতত্ত্ববিদ স্যামুয়েল ওয়ারেন ক্যারি (Samuel Warren Carey) সর্বপ্রথম তপ্তবিন্দু (Hotspot) শব্দটি ব্যবহার করেন।

উল্লেখ্য, গুরুমন্ডলে উত্তপ্ত ম্যাগমার উর্দ্ধমুখী প্রবাহকে প্লিউম বলে। গুরুমন্ডলের গভীরে সৃষ্ট হয়ে উত্তপ্ত গলিত ম্যাগমা স্তম্ভাকারে বিচ্ছিন্ন অবস্থানে প্রায় ১০০-২৪০ কিমি ব্যাসাকৃতিতে ধীরে (বছরে প্রায় ২ মিটার) ঊর্ধ্বগামী হয়। বিভিন্ন গভীরতা থেকে উঠে আসা এই গলিত ম্যাগমার স্তম্ভকে ম্যান্টল প্লিউম (Mantle Plume) বলে। উল্লেখ্য, ১৯৬৩ সালে কানাডিয়ান ভূতত্ত্ববিদ জন টুজো উইলসন (John Tuzo Wilson) সর্বপ্রথম ম্যান্টল প্লিউম সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিলেন। তবে, ১৯৭১ সালে আমেরিকান ভূ-পদার্থবিদ উইলিয়াম জেসন মর্গ্যান (William Jason Morgan) সর্বপ্রথম ভূ-গাঠনিক বিদ্যাতে প্লিউম (Plume) শব্দটি ব্যবহার করেন। ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর ভূ-গঠনের ইতিহাসে অতি নিবিড় আগ্নেয় কার্যকলাপ (Intense Volcanic Activities)-এ নিম্ন গুরুমন্ডলের তলদেশ (যেখানে কেন্দ্রমন্ডল থেকে প্রচন্ড উত্তাপ সংযোজিত হয়) থেকে বিপুল পরিমাণে, বৃহৎ আকারে ম্যাগমার উত্থান ঘটে। সাধারণ ম্যান্টল প্লিউমের চেয়ে বৃহৎ আকারের এইরূপ ম্যাগমার উত্থানকে সুপারপ্লিউম (Superplume) বলা হয়। উদাহরণ — মধ্য ক্রিটাশিয়াস যুগ (১২৫-৮০ মিলিয়ন বছর পূর্বে) -এর সুপারপ্লিউম।

Topic - Hotspot

প্রচলিত মতে, পৃথিবীতে ২১ টি তপ্তবিন্দু (Hotspot) রয়েছে। তবে, ২০০৩ সালে আর্থস অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্স লেটার্স (Earth and Planetary Science Letters) -এ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র (V. Courtillot et al.) -তে ৪৯ টি তপ্তবিন্দুর উল্লেখ রয়েছে। আবার, www.mantleplumes.org -এর তথ্য অনুসারে, পৃথিবীতে তপ্তবিন্দুর সংখ্যা ৬৬। তপ্তবিন্দু (Hotspot) -এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল — (১) তপ্তবিন্দু অঞ্চলে অধিক পরিমাণে তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতি দেখা যায়। (২) তপ্তবিন্দু অঞ্চলের ম্যাগমা অপেক্ষাকৃত তরল ও গতিশীল হয়। (৩) ভূ-ত্বকে তপ্তবিন্দুর অবস্থান প্রায় স্থির হয়। তবে তপ্তবিন্দুর উপরে সঞ্চরণশীল পাতগুলির সরণের কারণে তপ্তবিন্দুর আপাত স্থানান্তর ঘটে। (৪) ভূগর্ভে কমপক্ষে ৭০০ কিমি গভীরতা থেকে তপ্তবিন্দুর ম্যাগমার স্রোত উৎপত্তি লাভ করে। (৫) তপ্তবিন্দু অঞ্চলে পৃথিবীর মোট নিঃসারী আগ্নেয় শিলার ১২% সৃষ্টি হয়। পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য তপ্তবিন্দুগুলি হল — আইসল্যান্ড তপ্তবিন্দু (Iceland Hotspot), আফার তপ্তবিন্দু (Afar Hotspot), রিইউনিয়ন তপ্তবিন্দু (Reunion Hotspot), ইয়েলোস্টোন তপ্তবিন্দু (Yellowstone Hotspot), হাওয়াই তপ্তবিন্দু (Hawaii Hotspot) ইত্যাদি।

(Topic – Hotspot)

SSC Upper Primary TET Social Studies (Bengali Version)

ভূগোল বিচিত্রা : প্রসঙ্গ – বিযুক্তিরেখা 

ভূগোল বিচিত্রা : গোল্ডশ্মিড্ট শ্রেণীবিভাগ 

ভূগোল বিচিত্রা : নীল কলা 

One thought on “Topic – Hotspot

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!