Sunday, June 8, 2025

ভূগোলিকা-Bhugolika

ভূগোল শিক্ষার অনন্য প্রতিষ্ঠান

ভূগোলিকা-Bhugolika

ভূগোল শিক্ষার অনন্য প্রতিষ্ঠান

ভূগোল বিচিত্রা

Topic – Discontinuity Line

প্রসঙ্গ – বিযুক্তিরেখা (Topic – Discontinuity Line)

আপনাকে ভূগোলিকা-Bhugolika -এর ‘ভূগোল বিচিত্রা’ বিভাগে স্বাগত জানাই। আজকের পোস্ট : প্রসঙ্গ – বিযুক্তিরেখা (Topic – Discontinuity Line)।

▶️▶️▶️ ভূ-কম্প তরঙ্গের গতিবিধির মাধ্যমে ভূ-অভ্যন্তরীণ গঠন নির্ণয়ে বিযুক্তিরেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভূ-অভ্যন্তরে দুই ভিন্ন গাঠনিক স্তরের মধ্যবর্তী সীমারেখাকে বিযুক্তিরেখা (Discontinuity Line) বলে। অর্থাৎ কোনো বিযুক্তিরেখা ভূ-অভ্যন্তরে দুই ভিন্ন গাঠনিক স্তরকে পৃথক করে। ভূ-অভ্যন্তরে ভূ-কম্প তরঙ্গের গতিবিধি, আকস্মিক প্রতিফলন ও প্রকট প্রতিসরণের মাধ্যমে বিযুক্তিরেখা চিহ্নিত করা হয়। পৃথিবীর ভূ-গাঠনিক স্তরবিন্যাসে ৫ টি বিযুক্তিরেখা রয়েছে। যথা — কনরাড বিযুক্তিরেখা, মোহোরোভিচিচ বিযুক্তিরেখা, রেপেটি বিযুক্তিরেখা, গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখা এবং লেহম্যান বিযুক্তিরেখা।

(১) কনরাড বিযুক্তিরেখা (Conrad Discontinuity Line) : ভূ-অভ্যন্তরে যে বিযুক্তিরেখা মহাদেশীয় ভূ-ত্বক (Continental Crust) এবং মহাসাগরীয় ভূ-ত্বক (Oceanic Crust) স্তরকে পৃথক করেছে, তাকে কনরাড বিযুক্তিরেখা বলে। অর্থাৎ কনরাড বিযুক্তিরেখা হল সিয়াল (Sial) ও সিমা (Sima) -এর মধ্যবর্তী বিযুক্তিরেখা। ১৯২৩ সালে অস্ট্রিয়ান-আমেরিকান বিজ্ঞানী ভিক্টর কনরাড (Victor Conrad) এই বিযুক্তিরেখা আবিষ্কার করেন। তাই, তাঁরই নামানুসারে এই বিযুক্তিরেখা কনরাড বিযুক্তিরেখা নামে পরিচিত। কনরাড বিযুক্তিরেখার গড় গভীরতা (Average Depth) ১৫-২০ কিমি। শুধুমাত্র মহাদেশীয় অঞ্চলের নিচেই কনরাড বিযুক্তিরেখা পাওয়া যায়। কনরাড বিযুক্তিরেখার গড় বেধ (Average Thickness) হল ২-৩ কিমি। কনরাড বিযুক্তিরেখার সাথে ব্রিটল-ডাকটাইল ট্রানজিশন জোন (Brittle-Ductile Transition Zone) -এর নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। P তরঙ্গের গতিবেগ কনরাড বিযুক্তরেখার উর্দ্ধে ৬.১ কিমি/সেকেন্ড এবং নিম্নে ৬.৭ কিমি/সেকেন্ড।

(২) মোহোরোভিচিচ বিযুক্তিরেখা (Mohorovičić Discontinuity Line) : ভূ-অভ্যন্তরে যে বিযুক্তিরেখা ভূ-ত্বক (Crust) এবং গুরুমন্ডল (Mantle) স্তরকে পৃথক করেছে, তাকে মোহোরোভিচিচ বিযুক্তিরেখা বলে। এই বিযুক্তিরেখা সংক্ষেপে ‘মোহো বিযুক্তিরেখা’ (Moho Discontinuity Line) নামেও পরিচিত। ১৯০৯ সালে ক্রোয়েশিয়ান বিজ্ঞানী আন্দ্রিয়া মোহোরোভিচিচ (Andrija Mohorovičić) এই বিযুক্তিরেখা আবিষ্কার করেন। তাই, তাঁরই নামানুসারে এই বিযুক্তিরেখা মোহোরোভিচিচ বিযুক্তিরেখা নামে পরিচিত। মোহোরোভিচিচ বিযুক্তিরেখার গড় গভীরতা (Average Depth) ৩৫ কিমি। মহাদেশীয় ভূ-ত্বকের নিচে ২০-৭০ কিমি গভীরতায় এবং মহাসাগরীয় ভূ-ত্বকের নিচে ৫-১০ কিমি গভীরতায় মোহোরোভিচিচ বিযুক্তিরেখা পাওয়া যায়। এই বিযুক্তিরেখা মূলত শিলামন্ডল (Lithosphere) -এর মধ্যেই অবস্থান করে৷ শুধুমাত্র মধ্য-মহাসাগর শৈলশিরা (Mid-Ocean Ridge) -এর নিচে মোহোরোভিচিচ বিযুক্তিরেখা শিলামন্ডল-ক্ষুব্ধমন্ডল সীমারেখা (Lithosphere-Asthenosphere Boundary/LAB) রূপে অবস্থান করে। মোহোরোভিচিচ বিযুক্তিরেখার গড় বেধ (Average Thickness) হল ৫০০ মিটার। P তরঙ্গের গতিবেগ মোহোরোভিচিচ বিযুক্তরেখার উর্দ্ধে ৬.৭-৭.২ কিমি/সেকেন্ড এবং নিম্নে ৭.৬-৮.৬ কিমি/সেকেন্ড।

(৩) রেপেটি বিযুক্তিরেখা (Repetti Discontinuity Line) : ভূ-অভ্যন্তরে যে বিযুক্তিরেখা উর্দ্ধ গুরুমন্ডল (Upper Mantle) এবং নিম্ন গুরুমন্ডল (Lower Mantle) স্তরকে পৃথক করেছে, তাকে রেপেটি বিযুক্তিরেখা বলে। ১৯৩০ সালে আমেরিকান বিজ্ঞানী উইলিয়াম চার্লস রেপেটি (William Charles Repetti) এই বিযুক্তিরেখা আবিষ্কার করেন। তাই, তাঁরই নামানুসারে এই বিযুক্তিরেখা রেপেটি বিযুক্তিরেখা নামে পরিচিত। উল্লেখ্য, আমেরিকান ভূতত্ত্ববিদ অ্যালবার্ট ফ্রান্সিস বার্চ (Albert Francis Birch) পৃথিবীর উর্দ্ধ গুরুমন্ডল এবং নিম্ন গুরুমন্ডলের মধ্যবর্তী এক ভূতাত্ত্বিক সীমারেখা (পরিবর্তনশীল অঞ্চল) -এর উপস্থিতি উল্লেখ করেন। তাই, অনেক সময় রেপেটি বিযুক্তিরেখাকে ‘বার্চ বিযুক্তিরেখা’ (Birch Discontinuity Line) বলা হয়। রেপেটি বিযুক্তিরেখার গড় গভীরতা (Average Depth) ৬৬০-৭০০ কিমি (মতান্তরে ১০০০ কিমি)। P তরঙ্গের গতিবেগ রেপেটি বিযুক্তরেখার উর্দ্ধে ৭.৬-৮.৬ কিমি/সেকেন্ড এবং নিম্নে ১০-১৩ কিমি/সেকেন্ড।

প্রসঙ্গ - বিযুক্তিরেখা (Topic - Discontinuity Line)

(৪) গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখা (Gutenberg Discontinuity Line) : ভূ-অভ্যন্তরে যে বিযুক্তিরেখা গুরুমন্ডল (Mantle) ও কেন্দ্রমন্ডল (Core) স্তরকে পৃথক করেছে, তাকে গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখা বলে। অর্থাৎ গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখা হল নিম্ন গুরুমন্ডল (Lower Mantle) এবং বহিঃকেন্দ্রমন্ডল (Outer Core) -এর মধ্যবর্তী বিযুক্তিরেখা। ১৯১২ সালে জার্মান-আমেরিকান ভূপদার্থবিজ্ঞানী বেনো গুটেনবার্গ (Beno Gutenberg) এই বিযুক্তিরেখা আবিষ্কার করেন। তাই, তাঁরই নামানুসারে এই বিযুক্তিরেখা গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখা নামে পরিচিত। উল্লেখ্য, ১৮৯৭ সালে জার্মান ভূ-কম্পতরঙ্গবিদ এমিল উইচার্ট (Emil Wiechert) গুরুমন্ডল এবং কেন্দ্রমন্ডলের সীমারেখা সম্পর্কে প্রথম ধারণা দিয়েছিলেন। তাই, অনেক সময় গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখাকে ‘উইচার্ট-গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখা’ (Wiechert-Gutenberg Discontinuity Line) বলা হয়। গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখা ‘কেন্দ্রমন্ডল-গুরুমন্ডল সীমারেখা’ (Core-Mantle Boundary/CMB) নামেও পরিচিত। গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখার গড় গভীরতা (Average Depth) ২৮৯০ কিমি। P তরঙ্গের গতিবেগ গুটেনবার্গ বিযুক্তিরেখার উর্দ্ধে ১০-১৩ কিমি/সেকেন্ড এবং নিম্নে ৮-১০ কিমি/সেকেন্ড।

(৫) লেহম্যান বিযুক্তিরেখা (Lehmann Discontinuity Line) : ভূ-অভ্যন্তরে যে বিযুক্তিরেখা বহিঃকেন্দ্রমন্ডল (Outer Core) ও অন্তঃকেন্দ্রমন্ডল (Inner Core) স্তরকে পৃথক করেছে, তাকে লেহম্যান বিযুক্তিরেখা বলে। ১৯৩৬ সালে ড্যানিশ ভূ-কম্পতরঙ্গবিদ ইঙ্গে লেহম্যান (Inge Lehmann) এই বিযুক্তিরেখা আবিষ্কার করেন। তাই, তাঁরই নামানুসারে এই বিযুক্তিরেখা লেহম্যান বিযুক্তিরেখা নামে পরিচিত। লেহম্যান বিযুক্তিরেখা অন্তঃকেন্দ্রমন্ডল সীমারেখা (Inner Core Boundary/ICB) নামেও পরিচিত। লেহম্যান বিযুক্তিরেখার গড় গভীরতা (Average Depth) ৫১৫০ কিমি। P তরঙ্গের গতিবেগ লেহম্যান বিযুক্তিরেখার উর্দ্ধে ৮-১০ কিমি/সেকেন্ড এবং নিম্নে ১১ কিমি/সেকেন্ড।

Topic - Discontinuity Line

(Topic – Discontinuity Line)

SSC Upper Primary TET Social Studies (Bengali Version)

WBSSC SLST GEOGRAPHY PART-1

WBSSC SLST GEOGRAPHY PART-2

WBSSC SLST GEOGRAPHY PART-3

WBSSC SLST GEOGRAPHY PART-4

WBSSC SLST GEOGRAPHY PART-5

2 thoughts on “Topic – Discontinuity Line

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!