Silk Industry of Murshidabad
মুর্শিদাবাদের রেশম শিল্প
ভূগোলিকা-Bhugolika -এর ‘ভৌগোলিক প্রবন্ধ’ বিভাগে আপনাকে স্বাগত জানাই। ভৌগোলিক প্রবন্ধে আমরা ভূগোলের নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর বিস্তারিত তথ্য পেয়ে থাকি, যা আমাদের ভৌগোলিক জ্ঞানের বিকাশে সহায়ক হয়। আজকের ভৌগোলিক প্রবন্ধ : Silk Industry of Murshidabad । আশাকরি, এই প্রবন্ধের মাধ্যমে আপনি মুর্শিদাবাদের রেশম শিল্প সম্পর্কে বিশদ তথ্য পাবেন।

অবিভক্ত বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার স্বপ্নের রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ। সোনায় মোড়া ইতিহাসের দিনগুলো দূরে হেঁটে চলে গেলেও পুরোনো অভ্যাসে শহরটি এখনও রাজকীয়তা বয়ে নিয়ে চলেছে নিজের সঙ্গে। তবে শহরটির ইতিহাস আমাদের কী দিয়েছে! শুধু বয়ে যাওয়া কিছু বছরের ঢেউ আর একটা বিশ্বাসঘাতক সেনাপতি? না কখনোই না। আমরা পেয়েছি রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঐতিহ্যবাহী নস্টেলজিয়ার ছাপ, পেয়েছি বাংলার তথা বিশ্বের দরবারে বহুল জনপ্রিয় বহু সংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ হেরিটেজ, ভাগীরথীর তীরে হাজারদুয়ারী, ইমামবাড়া, পেয়েছি একমাত্র চার বাংলার টেরাকোটা, মুর্শিদাবাদী আম, খাদি, কাঁসা, শোলা শিল্প থেকে শুরু করে রাজ্য-দেশ-বিদেশ খ্যাত উল্লেখযোগ্য প্রতিভাবান নব প্রজন্মের কিছু দূত, যাঁরা সকলেই মুর্শিদাবাদের মাটির সন্তান। যদিও আজ নেই বাংলার নবাব, সম্রাট, ইংরেজ বণিক অথবা কাসিমবাজার কুঠি।
কিন্তু চারশো বছরে সব কিছুই কি একেবারে হারিয়ে গেছে? হয়তো বা না। মুর্শিদাবাদের গ্রামে গ্রামে আজও চাষ হয় তুঁত গাছ, চাষ হয় রেশমগুটি। পেয়েছি একতার নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত আরও কতো কী! পূর্ব ভারতের ‘সিল্ক মক্কা’ নামে খ্যাতি লাভ করেছে মুর্শিদাবাদ। মুর্শিদাবাদ সিল্কের কদর দেশ-বিদেশে রয়েছে। ভিন্ন দেশীয় মানুষের মধ্যে সিল্কের সেই চাহিদা রয়েছে, রয়েছে ভালোবাসাও। বুনে তৈরী হয় এমন বস্ত্রের মধ্যে সিল্ক সবচেয়ে সুন্দর, এর প্রাকৃতিক ঔজ্জ্বল্য অতুলনীয়। মুর্শিদাবাদের এক বিখ্যাত শিল্পের মধ্যে রেশম শিল্প গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়াও এটি ভারত তথা বিশ্বের বাজারে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ও স্থান দখল করে রয়েছে। রঙ করাও অত্যন্ত সহজ। পাশাপাশি এর শোষন করার ক্ষমতাও বেশি। হাল্কা, কোমল স্পর্শ এবং টেকসই হওয়ার জন্য বিশ্বে সিল্ক ‘বয়নশিল্পের রানী’ হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে এই শিল্পে বহু মানুষের প্রয়োজন হয়, বিনিয়োগ কম করতে হয় আর উপার্জনের সুযোগ ও বেশি থাকে। তাই জীবিকা হিসেবে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। (Silk Industry of Murshidabad)
‘রেশম’ শব্দটি ফার্সি ভাষা থেকে এসেছে। বহু প্রাচীন তথ্য হিসেবে, কৌটিল্যের লেখা অর্থশাস্ত্রে সুবর্ণ্যকূজের (বর্তমানে মুর্শিদাবাদের কর্ণসূবর্ণ) রেশমের কথা উল্লেখ্য পাওয়া যায়। রেশম সুতা উৎপাদনের লক্ষ্যে রেশমপোকা প্রতিপালনকে রেশম চাষ বলে। রেশম চাষের ইংরেজি শব্দ ‘Sericulture’-এর আভিধানিক অর্থ Culture of Sericine বা সেরিসিন নামক এক ধরনের প্রোটিনের লালন। এই সেরিসিন হল রেশমের মূল গাঠনিক পদার্থ। অর্থাৎ যে জীব সেরিসিন নামক প্রোটিন বস্তু প্রস্তুত করে, তার লালন-পালনই হচ্ছে সেরিকালচার বা রেশম চাষ। উৎকৃষ্ট রেশম চাষের জন্য প্রাথমিক প্রয়োজন হল পলুপোকার খাদ্য হিসেবে উচ্চ গুনমানের তুঁত পাতার উৎপাদন। এই অঞ্চলে তুঁত গাছের চাষ করা হয়। রেশমগুটি থেকে রেশম তৈরি করা হয়। রেশমগুটি আসলে রেশম মথের শুঁয়োপোকা ; এদের একমাত্র খাদ্য তুঁতপাতা। রেশমকীট ডিম থেকে জন্মায় এবং গুটিতে রূপান্তরিত হওয়ার পর্যায় শেষ করে তারা রেশম মথ হিসেবে আবির্ভূত হয়। স্ত্রী মথ তখন কালচক্র পুনরায় শুরু করার জন্য ডিম পাড়ে। গুটিবদ্ধ অবস্থায় রেশম পিউপা বা কীটগুলিকে মেরে ফেলে সেগুলিকে সেদ্ধ করে সুতা ছাড়ানো হয় এবং পরে তা গোটানো হয়। এই সুতা বিভিন্ন ধরনের বস্ত্র তৈরির জন্য নানাভাবে প্রস্তুত করা হয়।
সামান্য এক পোকা যে লাবণ্যে তুল্যমূল্য রেশমের উৎস – তা জানতে বিশ্ববাসীর সময় লেগেছে বহু বছর। এই উৎপাদনের রহস্য নিজেদের মধ্যে বহুকাল গোপন রেখেছিল চীনারা। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে চীনে প্রথম রেশম আবিষ্কৃত হয়। আবিষ্কারের পর দীর্ঘ সময় পর্যন্ত চীন রেশম চাষ ও উৎপাদনে গোপনীয়তা বজায় রাখে। পরবর্তী কালে সিল্ক রোডের মাধ্যমে চীনের বেইজিং থেকে ভূমধ্যসাগরের উপকূল বেয়ে প্রথমে গ্রিস ও পরে রোমান সাম্রাজ্যে রেশম ব্যবসা প্রসার লাভ করে। তারও পরে দক্ষিণে ইয়েমেন, বার্মা (মায়ানমার) ও ভারতবর্ষে সম্প্রসারিত হয় সিল্ক রুট। উল্লেখ্য, জুন-২০১৪ সালে, ইউনেস্কো এই সিল্ক রোডের চাং’আন-তিয়ানশান করিডোরকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসাবে স্থান দিয়েছে।
ভৌগোলিক প্রবন্ধ : রাঢ় অঞ্চলের টুসু উৎসব
ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে মোঘল সম্রাটদের পৃষ্ঠপোষকতায় তৎকালীন অবিভক্ত বাংলায় রেশম শিল্পের ব্যাপক প্রসার লাভ করে। মুর্শিদাবাদ বেঙ্গল সিল্কের প্রধান উৎপাদনস্থল হিসেবে পরিচিত হয়। ইংরেজ বণিকরা মুর্শিদাবাদের রেশমের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে ১৬২১ সালের দিকে। দিল্লি-আগ্রায় মুঘল শাসন যুগ থেকেই মুর্শিদাবাদের প্রশাসনিক গুরুত্ব বাড়তে থাকে। বলা হয়ে থাকে যে রেশমই এই প্রশাসনিক গুরুত্বের কারণ। ১৬৬০-এর দিকে মুর্শিদাবাদ একটি পরগনা সদর দফতর হিসেবে গণ্য হয়। মুর্শিদাবাদের সিল্কের টানে ভারতবর্ষের অন্যান্য রাজা-মহারাজারাও বাংলা তথা মুর্শিদাবাদে পাইক-পেয়াদা-পণ্ডিত পাঠিয়ে রেশম চাষের দীক্ষা নিতেন। কথিত আছে, রেশম চাষের পদ্ধতি ও ব্যবসায় সম্পর্কে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য টিপু সুলতান মহীশূরের তাঁতিদের পাঠিয়েছিলেন বাংলায়। বাংলা থেকেই পরে উত্তর ও দক্ষিণ ভারতে গুটিপোকা তার জাল বিস্তার করে, রেশম বিস্তৃত হয়। এই সিল্ক তখন ইউরোপে রপ্তানি করা হতো। অনেক ঐতিহাসিকের মতে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তথা ব্রিটিশরা ভারতে তথা মুর্শিদাবাদে আসে এই রেশমের টানে। সময়ের সাথে সাথে বিদেশি বণিকদের আনাগোনা শুরু হয়। ওলন্দাজদের কালিকাপুরে, ফরাসিদের সৈদাবাদে, ইংরেজদের কাশিমবাজার ও জঙ্গিপু্রে কুঠির গড়ে ওঠে। এই সমস্ত বিদেশি বণিকরাই ইউরোপের বাজারে দামে সস্তা অথচ অন্য স্থানের রেশমের তুলনায় উন্নত হওয়ায় মুর্শিদাবাদের রেশম পৌঁছে দিত। বার্ণিয় (১৬৬৬ খ্রি:), জেমস রেনেলের (১৭৭৯ খ্রি:) বিবরণে মুর্শিদাবাদের গুনমান ও মূল্য সম্পর্কে জানা যায়। এই কথা নিঃসন্দেহে বলা হয় যে, মুর্শিদাবাদ বা বহরমপুর একসময় ছিল ‘রেশমের আঁতুড়ঘর’। (Silk Industry of Murshidabad)
মুর্শিদাবাদের রেশম চাষের এলাকা হিসেবে কান্দির বড়ঞা, জঙ্গিপু্র, রঘুনাথগঞ্জ, ডোমকলের রানিনগর প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। পাশাপাশি জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ, মির্জাপুর, হরিহরপাড়া, ইসলামপুর, দৌলতবাজার প্রভৃতি স্থান রেশম বয়নশিল্পের অতি পরিচিত কেন্দ্রস্থল। তাছাড়াও মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের লাগোয়া তাঁতিপাড়া বহরমপুরে মতোই আরেকটি ছোট শহর। এখানে তৈরি হয় সিল্কের শাড়ি। লোকে একে ‘সিল্ক সিটিও’ বলে। সপ্তদশ শতাব্দী থেকেই জিয়াগঞ্জ সংলগ্ন বালুচর এলাকাকে ঘিরে একটি রেশম শিল্পাঞ্চল কেন্দ্র গড়ে উঠেছিল। বালুচরি শাড়ির মধ্যে দিয়েই সে সময় রেশম শিল্পের উৎকর্ষতা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল। বালুচরি শাড়িকে বলা হত ‘আর্ট ইন ইন্ডাস্ট্রি’। দশ হাত লম্বা পঁয়তাল্লিশ ইঞ্চি চওড়া ওই শাড়ির আঁচলে জরি দিয়ে রামায়ণ, মহাভারত, বা নানা পৌরাণিক কাহিনীর নকশা আঁকা হত। বালুচর এলাকাটি ছিল শিল্পীদের বোনা বস্ত্রাদির সব চেয়ে বড় আড়ত ও ব্যবসাকেন্দ্র।
ভৌগোলিক প্রবন্ধ : বিষ্ণুর দশাবতার এবং ডারউইনের বিবর্তনবাদ
বর্তমান সময়ে মুর্শিদাবাদের সিল্ক ব্যবসায়ীদের জন্য সরকারি কোনো সহায়তা নেই তেমনিভাবে, হতাশা সর্বত্রই গ্ৰাস করছে। এক সময়ের রাজধানীর (মুর্শিদাবাদ) মানুষগুলো ইতিহাস দিয়ে নিজের বুক তো গর্বে ভরিয়েছে প্রতিদিন, কিন্তু পেট ভরাতে পারেনি। কারণ গর্বের ইতিহাসে বুক ফোলে, পেট না। আর এই পেট যাতে ভরে থাকে তার জন্য প্রয়োজন জেলায় প্রচুর পরিমাণে কর্মসংস্থানের মাত্রা বাড়ানো। এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের। মুর্শিদাবাদের রেশম চাষে ভাটা পড়ছে, সম্মুখীন হতে হচ্ছে ইলেকট্রিক বিপ্লবের মুখে। কর্নাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের সরকার প্রতিটি জেলায় একাধিক কোকুন (রেশমের গুটি) মার্কেট তৈরি করে রেশম বিক্রির পরিকাঠামো গড়ে দিয়েছে। ফলে সেই সব রাজ্যের চাষিদের রেশম বিক্রি করতে বিপাকে পড়তে হয় না। চাষিরা সেখানে ভাল দাম পান। কিন্তু এ রাজ্যে কেবল মালদহে একটি মাত্র কোকুন মার্কেট রয়েছে। তার ফলে এ রাজ্যের রেশম চাষিরা বাজারের অভাবে কম দাম পান। অথচ জলবায়ু ও মাটির উর্বরতা গুণে এ রাজ্য রেশম চাষে দেশের মধ্যে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়ার অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। কোকুন বিক্রি করার জন্য এ রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ৪-৫টি করে কোকুন বিক্রয় কেন্দ্র খুলতে হবে। তবেই বাজার পাবে রেশম চাষিরা। চাষিদের পরিবহণ খরচ ও যাতায়াতের সময় কম লাগবে। পণ্যের গুণমাণও ভাল থাকবে।
বহরমপুর শহর লাগোয়া চুয়াপুর এলাকায় ১৯৪৩ সালে গড়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এই কেন্দ্র থেকে জানা যায় যে, মুর্শিদাবাদ, মালদহের মতো বন্যাপ্রবণ জেলার জন্য উপযোগী এক নতুন পলুগাছের জন্ম দেওয়া হয়েছে। মালবেরি প্রজাতির নতুন প্রজন্মের ওই গাছের নাম ‘সি ২০২৮’। মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলায় প্রতি বছর রেশম চাষিরা বন্যার কবলে পড়ে নিঃস্ব হয়। ‘সি ২০২৮’ পলুগাছের শিকড় ৩০-৩৫ দিন জলে ডুবে থাকলেও পচন ধরে না। ফলে এই বানভাসি জেলার রেশম চাষিরা উপকৃত হবেন।
যে রেশম বস্ত্রগুলি আন্তর্জাতিক খ্যাতিলাভ করেছে – বেনারসি, কাঞ্জিভরম (বা কাঞ্চীপুরম), বোমকাই, ইক্কত, বালুচরী, মুর্শিদাবাদ, ধর্মাভরম, পাটোলা, পৈঠানি ইত্যাদি – সেগুলি আজ আমাদের দেশের শিল্পীরাই ও মুর্শিদাবাদ জেলার শিল্পীরাই তৈরী করে থাকেন। একখানি রেশম শাড়ির আভিজাত্য একটি দামি সুন্দর পোশাকের চেয়ে অনেক বেশি। রেশম শাড়ি বিত্ত, সভ্যতা, বাঙালি তথা ভারতীয় রমনীর ঐতিহ্যগত সৌন্দর্য, সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যের প্রতীক। প্রকৃতির অকৃপণ দানে আমরা চিরকালই সমৃদ্ধ। প্রাণধারণের উপকরণ ছাড়া আমাদের সাবলীল জীবনযাপন সম্ভব হয়েছে প্রকৃতির আনুষঙ্গিক দানে – তাই প্রকৃতির কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। (Silk Industry of Murshidabad)
উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল নির্যাস [XI : Semester-II]
লেখকঃ- ওবাইদুর রহমান (লালগোলা, মুর্শিদাবাদ)
তথ্যসূত্রঃ- Wikipedia ; Vikaspedia ; Banglapedia ; Agriprdia ; Krishijagaran Media ; Banglanews24 ; রেশম কৃষি বার্তা (ত্রৈমাসিক পত্রিকা, কেন্দ্রীয় রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, বহরমপুর) ; মুর্শিদাবাদের গর্ব ফেসবুক পেজ ; আনন্দবাজার পত্রিকা ; বাংলার চাষাবাস ফেসবুক পেজ
Pingback: Nature’s Beloved Sentinelese - ভূগোলিকা-Bhugolika
Pingback: Sisal Cultivation in Tribal Development - ভূগোলিকা-Bhugolika
Very Good
Very Nice
Pingback: Topic - Golden Quadrilateral Project - ভূগোলিকা-Bhugolika