পরাক্রম দিবস (Parakram Divas)

 

আজ ২৩ শে জানুয়ারি (23 January), পরাক্রম দিবস (Parakram Divas), যা নেতাজি জয়ন্তী (Netaji Jayanti) নামেও পরিচিত। ১৮৯৭ সালের ২৩ শে জানুয়ারি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদী শ্রেষ্ঠ নায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু জন্মগ্রহণ করেছিলেন। প্রতি বছর ২৩ শে জানুয়ারি তারিখটি নেতাজি জয়ন্তী হিসাবে পালিত হয়। ২০২১ সালের ১৯ শে জানুয়ারি ভারত সরকার নেতাজির স্মরণে এই তারিখটি পরাক্রম দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। পরাক্রম শব্দটির অর্থ হল শৌর্য, বীরত্ব, নির্ভীকতা। ২০২১ সাল থেকে ২৩ শে জানুয়ারি তারিখটি পরাক্রম দিবস রূপে পালিত হয়।

ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭-?) এক অনন্য, চিরস্মরণীয়, কিংবদন্তী ব্যক্তিত্ব। ১৯২১ সালে তিনি কলকাতায় অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভারতীয় রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের হরিপুরা (১৯৩৮) ও ত্রিপুরী (১৯৩৯) অধিবেশনে সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৩৯ সালের ৩ রা মে তিনি ফরওয়ার্ড ব্লক গঠন করেন। ১৯৪১ সালে গৃহবন্দী নেতাজি ব্রিটিশদের চোখে ধূলো দিয়ে কাবুল-মস্কো হয়ে বার্লিনে পৌঁছান। ১৯৪৩ সালে তিনি এক দুঃসাহসিক সাবমেরিন যাত্রায় বার্লিন থেকে টোকিও পৌঁছান। ১৯৪৩ সালের ২৫ শে আগস্ট নেতাজি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (INA) বা আজাদ হিন্দ ফৌজ-এর সর্বাধিনায়ক হন এবং ২৩ শে অক্টোবর ব্রিটেন ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ১৯৪৩ সালের ৩০ শে ডিসেম্বর নেতাজি ব্রিটিশমুক্ত আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নামকরণ করেন শহীদ ও স্বরাজ। ১৯৪৪ সালে আজাদ হিন্দ ফৌজ বার্মা (মায়ানমার) সীমান্ত দিয়ে ব্রিটিশদের ওপর আক্রমণ করেছিল। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নেতাজির নেতৃত্বাধীন আজাদ হিন্দ ফৌজের সংগ্রাম ভারতের ইতিহাসে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কথিত যে, ১৯৪৫ সালের ১৮ ই আগস্ট বর্তমান তাইওয়ানের তাইহোকুতে এক বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু ঘটে। তবে, মুখার্জি কমিশন (১৯৯৯), ফরাসি সিক্রেট সার্ভিস রিপোর্ট (১১ ই ডিসেম্বর, ১৯৪৭), ভারত সরকার কর্তৃক প্রকাশিত নেতাজি সংক্রান্ত ফাইল এবং সাম্প্রতিক কালে অনুজ ধর, চন্দ্রচূড় ঘোষের বিশদ গবেষণা থেকে এটা স্পষ্ট যে, ওই তথাকথিত বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু ঘটেনি এবং ১৯৪৫ সালের পরও নেতাজি জীবিত ছিলেন।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কিছু বিখ্যাত উক্তি :

‘তোমরা আমাকে রক্ত ​​দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।’

‘জগতের সব কিছু ক্ষণভঙ্গুর। শুধু একটা জিনিস ভাঙে না, সে বস্তু, ভাব বা আদর্শ।’

‘যারা নিজের শক্তির উপর নির্ভর করে, তারা এগিয়ে যায় এবং যারা ধার করা শক্তির উপর নির্ভর করে, তারা আহত হয়।’

‘আমাদের যাত্রা যতই ভয়ঙ্কর, বেদনাদায়ক এবং খারাপ হোক না কেন, আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সফলতার দিন হয়তো অনেক দূরে, কিন্তু আসতে বাধ্য।’

‘একজন সৈনিক হিসাবে অবশ্যই তিনটি আদর্শ লালন করতে হবে এবং বেঁচে থাকতে হবে : সত্য, কর্তব্য এবং ত্যাগ।’

‘মনে রাখবেন, অন্যায়কে সহ্য করা এবং অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করাই সবচেয়ে বড় অপরাধ।’

‘সাফল্য সবসময় ব্যর্থতার স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে থাকে। তাই ব্যর্থতাকে কেউ ভয় পাবেন না।’

‘আলোচনার মাধ্যমে ইতিহাসের কোনো বাস্তব পরিবর্তন কখনোই অর্জিত হয়নি।’

‘একজন ব্যক্তি একটি ধারণার জন্য মারা যেতে পারে, কিন্তু সেই ধারণাটি, তার মৃত্যুর পরে, হাজার জীবনে অবতীর্ণ হবে।’

‘স্বাধীনতা কেউ দেয় না, স্বাধীনতা অর্জন করে নিতে হয়।’

SSC Upper Primary TET Social Studies (Bengali Version)

গুরুত্বপূর্ণ দিবস : ককবরক দিবস