Tuesday, July 29, 2025

ভূগোলিকা-Bhugolika

ভূগোল শিক্ষার অনন্য প্রতিষ্ঠান

ভূগোলিকা-Bhugolika

ভূগোল শিক্ষার অনন্য প্রতিষ্ঠান

ভৌগোলিক প্রবন্ধ

Padma River’s Hilsa of Murshidabad

মুর্শিদাবাদের পদ্মা নদীর ইলিশ

ভূগোলিকা-Bhugolika -এর ‘ভৌগোলিক প্রবন্ধ’ বিভাগে আপনাকে স্বাগত জানাই। ভৌগোলিক প্রবন্ধে আমরা ভূগোলের নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর বিস্তারিত তথ্য পেয়ে থাকি, যা আমাদের ভৌগোলিক জ্ঞানের বিকাশে সহায়ক হয়। আজকের ভৌগোলিক প্রবন্ধ : Padma River’s Hilsa of Murshidabad । আশাকরি, এই প্রবন্ধের মাধ্যমে আপনি মুর্শিদাবাদের পদ্মা নদীর ইলিশ মাছ সম্পর্কে বিশদ তথ্য পাবেন।

Padma River's Hilsa of Murshidabad
পদ্মা নদীর ইলিশ

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আবদুল মাঝির গল্পে, আবদুল নামে একজন ব‍্যক্তি, সে পেশায় মাঝি, ছুঁচলো তার দাড়ি, গোঁফ তার কামানো, মাথা তার নেড়া। সে লেখকের দাদাকে এনে দিত পদ্মা থেকে ইলিশ মাছ আর কচ্ছপের ডিম। এই গল্প আমাদের প্রায় সবারই জানা রয়েছে। কথায় বলে ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’। দুপুরে মাছ-ভাত না খেলে যেন বাঙালির মন ভরে না। আর সেই মাছ যদি হয় ইলিশ, তাহলে তো কোনও কথাই নেই। আর বর্ষার সময় ইলিশের সঙ্গে অন্য কোনও মাছের জুড়ি মেলা ভার। এছাড়া ইলিশটা যদি হয় পদ্মার তাহলে তো সোনায় সোহাগা। ইলিশ মাছ মানে একমুঠো ভাত বেশি। ইলিশ মাছ মানে বাঙালির আবেগ। (Padma River’s Hilsa of Murshidabad)

দ্বাদশ শতকে অর্থাৎ নয় শত বছর আগে পণ্ডিত জীমূতবাহন ইলিশের নাম দিয়েছিলেন। তবে নামের পিছনে অর্থ রয়েছে। আমরা যে বানানটি লিখি, সেটা নয়। বানানটি হল ‘ইলীশ’‘ইল’ মানে ‘জলের মধ্যে’, আর ‘ঈশ’ কথার মানে যিনি ‘শাসক’। একসঙ্গে এর অর্থ দাঁড়ায় যে জল জগতের কর্তা। তবে বুৎপত্তির জন্য বানানটি এখন ‘ইলিশ’ লেখা হয়। এছাড়াও ইলিশ শব্দের অর্থ, তৈলাক্ত বা চকচকে। ‘FishBase’ ডেটাবেসে পঁচিশটি ভাষায় এই ইলিশের নাম দেওয়া হয়েছে। বৈশ্বিকভাবে ইলিশকে বলা হয় হিলসা শ্যাড (Hilsa Shad)। ভারতবর্ষে অর্থাৎ আমাদের দেশে আমরা বাংলা ভাষাভাষীরা বলে থাকি ইলিশ এবং ছোট ইলিশকে বলে থাকি খোকা ইলিশ। ওপার বাংলা অর্থাৎ বাংলাদেশে বলা হয়, ইলিশ মাছ, ইলিশ, পদ্মা ইলিশ, জাটকা — বাংলাদেশের কোনো কোনো এলাকায় ইলিশকে ইলশা-ও বলে। মায়ানমারে বার্মিজ ভাষায় বলা হয় না-থা-লোক, না-থালাংক। অসমীয়া ভাষায় বলা হয় ‘ইলিহি’। তেলুগু ভাষায় বলা হয় পালাসা, পালাসাহ, পালিয়া, পোলাসা। গুজরাটি ভাষায় বলা হয় চাকশি, চাকসি, চাসকি, পাল্লা। হিন্দিতে বলা হয় হিলসা, পালা। কানাড়া ভাষায় বলা হয় মুল্লাসু, পালাসা, পালিয়া, পোলাসা। মালয়ালম ভাষায় বলা হয় পালিয়াহ, পালুভা, ভালাভা। মারাঠি ভাষায় বলা হয় পালা, পাল্লা, পালভা। ওড়িয়া ভাষায় বলা হয় ইলিশ, ইলিশা, জোড়ি। তামিল ভাষায় বলা হয় উল্লাম, ভেনগান্নাই, সেভা। শ্রীলঙ্কায় তামিল ভাষায় ইলিশকে বলা হয় সেভ্ভা, উল্লাম। পাকিস্তানের পাঞ্জাবি ভাষায় ইলিশকে পাল্লা এবং উর্দুতে পালো ও পুল্লা বলা হয়। ভিয়েতনামে ইলিশকে বলা হয় ক্যাকে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে বৈশ্বিক নাম হিলসা বলেই ডাকা হয়। ইংল্যান্ডে বলা হয় হিলসা হেরিং। পোল্যান্ডে পোলিশ ভাষায় বলা হয় হিলজা ইনডিজস্কা। পর্তুগালে পর্তুগিজ ভাষায় ইলিশকে বলা হয় পালা। চেক ভাষায় ইলিশের নাম প্লাককা ইলিশা, স্লেড পালাসাহ। ডেনমার্কে ইলিশের নাম হিলসা-স্টামস্লিড। স্প্যানিশ ভাষায় ইলিশের নাম সাবালো হিলসা। সুইডিশ ভাষায় বলা হয় হিনডিস্ক স্টাকসিল। এস্তোনিয়ান ভাষায় ইলিশকে বলা হয় ইন্ডিয়া সালিলুসা। রাশিয়ায় রুশ ভাষায় এই ইলিশকেই ডাকা হয় তেনুয়ালোসা নামে। ইরাকে আরবি ভাষায় ইলিশের নাম শোর। ইরানে ফারসি ভাষায় ইলিশকে কয়েকটি নামে ডাকা হয়। যেমন: বার্ক, মাহি খোর কুচিকু, সবোর, সবুর, জাবুর, জমুর। ওমানে ইলিশকে ডাকা হয় চাকোরি নামে। ম্যান্দারিন চিনা ভাষায় চীনে ইলিশের নাম ইচাচা। উল্লেখ্য, ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মৎস্য (National Fish) এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য মৎস্য (State Fish)

ভৌগোলিক প্রবন্ধ : প্রসঙ্গ – বাস্তুতান্ত্রিক পদচিহ্ন

ইলিশের সাতকাহন বলতে গেলে শেষ হবে না। তাই তো বাঙালির সাহিত্যেও জায়গা করে নিয়েছে জলের রানি। তাই তো সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর কবিতা ‘ইলশে গুঁড়ি’-তে ইলিশ মাছের ডিমের কথা বলেছেন। প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘ঘনাদা’ থেকে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’-তেও রয়েছে ইলিশ প্রেমের গল্প। পদ্মার নৈসর্গিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নানাভাবে প্রভাবিত করেছে কবি নজরুল ইসলামকেও। তার বিখ্যাত কিছু গানে পদ্মার হারানো ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য্য ফুটে উঠেছে। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আবু ইসহাক রচিত ‘পদ্মার পলিদ্বীপ’ উপন্যাসটির উপজীব্য পদ্মার পাড়ের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার কথা তুলে ধরেছেন। কবি তালহা আজিজ পদ্মা নদীর সৌন্দর্য রুপ দেখে বলেছেন —
“পদ্মার তীরেতে বসবাস আমার,
মুগ্ধ আমি রূপ দেখে তার।
এর তীরেই আছে কত শত স্মৃতি।
রাতে জোনাকিরা দেয় জ্যোতি ;
মনে হয়, যেন স্বর্গের ছায়া!
কি অপরূপ তার মায়া!

(Padma River’s Hilsa of Murshidabad)

ভৌগোলিক প্রবন্ধ : পশ্চিমবঙ্গের ঋতু বৈচিত্র্য

পদ্মার উৎপত্তি ধরণীর উচ্চতম পর্বতমালা হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে। উত্তরাখন্ডে হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে ভাগীরথী এবং শতোপন্থ হিমবাহ থেকে অলকানন্দা — এই দুই ধারা দেবপ্রয়াগে মিলিত হয়ে গঙ্গা নামে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়েছে। এরপর উত্তর প্রদেশ ও বিহারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছে। গঙ্গা পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জ-২ ব্লকের অন্তর্ভুক্ত গিরিয়ার কাছে ভাগীরথী ও পদ্মা নামে দুটি শাখায় বিভক্ত হয়। ভাগীরথী শাখাটি পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে এবং পদ্মা শাখাটি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। এই পদ্মা নদীর ইলিশ মাছ বিখ্যাত। পদ্মার ইলিশে তেল বেশি এবং দেখতেও উজ্জ্বল। একই সঙ্গে স্বাদ, গন্ধ! পদ্মার ইলিশে মগ্ন মানুষ। সাধারণত এক থেকে দেড় বছরের মধ্যেই এরা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকে। বছরে এক থেকে দুই বার প্রজননে অংশ নিয়ে থাকে। প্রধান প্রজননকাল দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহ শুরুর সময় থেকে শীতের শুরু অর্থাৎ নভেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় প্রজননকাল শীতের শেষে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত। নদী মোহনার অগভীর ঘোলাজলে সাধারণত এরা সন্ধ‍্যা ও ভোরে প্রজননে অংশ নিয়ে থাকে। একটি মা ইলিশ এক প্রজনন ঋতুতে আড়াই থেকে ষোল লক্ষ পর্যন্ত ডিম দেয় ; যা মাছের ওজন, আকৃতি, প্রজননকাল ও স্থানের পরিবেশের উপর নির্ভরশীল করে। ইলিশের সংসার নোনা জল অর্থাৎ সমুদ্রে। তবে বর্ষায় স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে এই মাছ বেরিয়ে পড়ে মিষ্টি জলের খোঁজে। তখন বড় নদী যেমন পদ্মা, গঙ্গা, মেঘনা, ব্রহ্মপুত্র, মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, রূপনারায়ণ, ইছামতী, মাতলা, কাবেরী, নর্মদা, নদীতে ঘাঁটি বাঁধে ইলিশ। সেখানেই বংশবিস্তার করে। ডিম ফুটলে আবার একসঙ্গে সমুদ্রে পাড়ি দেয়। এর মধ্যে পদ্মা নদীর ইলিশ মাছের স্বাদ সবচেয়ে বেশি। পদ্মায় সাধারণত পদ্মা ইলিশ, চন্দনা ইলিশ ও গুর্তা ইলিশ পাওয়া যায়। পদ্মার ইলিশের গায়ে থাকে এক ধরনের গোলাপি আভা। ইলিশের ডিমও খুব জনপ্রিয় খাবার। এই মাছ রান্না করতে খুব অল্প তেল প্রয়োজন হয়। কারণ ইলিশ মাছে প্রচুর তেল থাকে। ইলিশ একটি চর্বিযুক্ত মাছ আর ইলিশে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। রান্নার জন‍্য সর্ষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ, কড়া ভাজা, দোপেঁয়াজা এবং ঝোল খুবই জনপ্রিয়। কচুর পাতা এবং ইলিশ মাছের কাটা, মাছের মাথা ইত্যাদির ঘন্ট রান্না করা হয়। ডিম ভর্তি ইলিশ মাছ এবং সুগন্ধি চাল দিয়ে বিশেষ একরকম রান্না করা হয়, যা ভাতুরি বা ইলিশ মাছের পোলাও নামে পরিচিত। এটি বর্ষাকালের একটি বিশেষ রান্না। ইলিশ মাছ টুকরো করে লবণে জারিত করে অনেক দিন সংরক্ষণ করা যায়। এভাবে সংরক্ষিত ইলিশকে আবার নোনা ইলিশও বলা হয়। ইলিশ ভাপিয়ে, ভেজে, সেদ্ধ করে, কচি কলাপাতায় মুড়ে পুড়িয়ে, সরিষা দিয়ে, জিরে, বেগুন, আনারস দিয়ে এবং শুঁকিয়ে শুটকি করে, আরো বিভিন্ন প্রণালীতে রান্না করা হয়। বলা হয়, ইলিশ মাছের প্রায় পঞ্চাশ রকম রন্ধনপ্রণালী রয়েছে। ইলিশের ডিম ও খুব জনপ্রিয় খাবার। এই সুস্বাদু মাছ সঠিক মাত্রায় গ্রহণ করলে তা হার্ট অ্যাটাক, ইসকিমিক হার্ট, অবসাদ, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার, সিজোফ্রেনিয়া, অ্যালঝাইমার্স, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধে বড় ভূমিকা নেয়। ব্রেস্ট ক্যানসার, জয়েন্টে ব‍্যথা ইত্যাদি কমাতেও সাহায্য করে।

ভৌগোলিক প্রবন্ধ : পতঙ্গভুক উদ্ভিদ সূর্যশিশির

মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলার মীনবাজার সারা বাংলার মৎস্যপ্রেমীদের কাছে স্বপ্নের মতন। তাই এখানে এলে মাছ না নিয়ে কেউ নিজের এলাকায় ফিরেছে, এমন নজির প্রায় নেই। লালগোলার নেতাজি মোড় থেকে জঙ্গিপুরে যাওয়ার রাজ্য সড়ক ধরে কয়েক মিটার এগোলেই বাঁদিকে লালগোলা মীন বাজার। এই মীন বাজারের সামনেই রাস্তার ধারে প্রতিদিন বিকেলে মাছের বাজার বসে। স্টিলের থালা ও প্লেটে রাখা হয় সদ্য পদ্মা ও স্থানীয় জলাশয় থেকে ধরা রকমারি মাছ। পদ্মার ইলিশ ছাড়াও পাওয়া যায় — রুই, কাতলা, কালবোস, মৃগেল, পার্সে, তোপসে, ভেটকি, মৌরলা, পিউলি, বাচা, ট্যাংরা, কাজলি, বাতাসি, বাটা, চিতল, ফলুই, বোয়াল, আড়, রিঠে, কই, মাগুর, কুঁচো চিংড়ি, গলদা চিংড়ি, পুঁটি, তেলাপিয়া, খয়রা — আরও কত নাম না জানা মাছ। বর্ষায় পদ্মার ইলিশের খোঁজেই লালগোলা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ লালগোলা মাছ বাজারে আসেন। মালদা, নদীয়া সহ ভিন্ন জেলা থেকে কাজের জন্য অনেকেই লালগোলায় আসেন। তাদের অনেকেই মাছ কিনে বাড়ি ফেরেন। পদ্মা নদীর সুস্বাদু ইলিশ মাছ বেশি পরিমাণে এখানে বিক্রি হয়। বিকেলে মাছ কিনতে বিকেল থেকে স্থানীয়দের পাশাপাশি জঙ্গিপুর, সাইদাপুর, সেখালিপুর, ওমরপুর, বড়জুমলা, ভগবানগোলা, লালবাগ প্রভৃতি দূরদূরান্ত থেকে ইলিশপ্রেমী ক্রেতারা মাছ কিনতে আসেন। ইলিশেরও আবার ভেদাভেদ রয়েছে ; যেমন চন্দনা, খয়রা, জাইতকা, ফ্যাঁসা ইত্যাদি ইলিশ। ভালো মাছ চিনে বাড়িতে নিয়ে আসতে পারলেই বাঙালির বাজার করা স্বার্থক। যেমন পেট বেশি মোটা থাকলেই বোঝা যায় ডিম হয়েছে। অথবা পেট টিপলে যদি মাছের পায়ুছিদ্র থেকে ডিম বেরিয়ে আসে তাহলেই বোঝা যায় ডিম ছেড়েছে সেই মাছ। বরফে সংরক্ষণ করা ইলিশে স্বাদ কমে। মাছের ঔজ্জ্বল্য কমলেই বুঝবেন এই মাছ সংরক্ষিত। অথবা মাছ যদি অধিক নরম হয়ে যায় বোঝা যায় সেটি টাটকা নয়। ইলিশ মাছ কিনতে গেলেও লাগে তুখোড় চোখ। তাই ইলিশ মাছ কেনার সময় ভালো ভাবে দেখে নিতে হবে।

মূলত সচেতনতার অভাবে ইলিশ মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। একসময় দুই বাংলার বর্ষায় বাঙালির পাতে একাই শাসন করত মাছের সেরা ইলিশ মাছ। অথচ আজ ক্রমশ কমে আসছে ইলিশ মাছের যোগান। ফলে মহার্ঘ্য হয়ে উঠছে বাঙালির প্রিয় মাছ। কিন্তু কারণটা কী? গবেষণা বলছে, নদীতে দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই দূষণই কেড়ে নিচ্ছে ইলিশ মাছ। গত কয়েক বছর ধরে লাগাতার বাড়তে থাকা দূষণের প্রভাবেই ইলিশ মাছের পরিমাণ হ্রাস হচ্ছে। আর তাতেই বাঙালি পাতে ইলিশ আজ বিরল। গবেষকদের আশংকা গঙ্গার দূষণের মাত্রা না কমানো গেলে আগামী দিনে ইলিশ পাওয়ায় দুষ্কর হয়ে উঠবে।

তাই মানুষকে সচেতন হতে হবে, নদীকে দূষণের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য। কখনই ছোট ইলিশ বা ঝাটকা ইলিশ কিনবেন না। ঝাটকা ইলিশের স্বাদ কখনই ভাল হয় না। আর ইলিশ ছোট অবস্থাতেই ধরে ফেললে, বড় হওয়ার সুযোগ না দিলে, তারা বংশবিস্তার করবে কী করে? তাই ছোট ইলিশ এড়িয়ে যান এবং পরবর্তী প্রজন্মকেও ইলিশ খাবার সুযোগ করে দিন। ইলিশের প্রতি বাঙালির ভালবাসা, ঠিক বলে বোঝানো যাবে না। পাতে সাদা ভাত, আর গা চুঁইয়ে তেল পড়া ভাজা ইলিশ! সঙ্গে নুন, লঙ্কা। এককথায় বলতে গেলে অমৃত। (Padma River’s Hilsa of Murshidabad)

উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল নির্যাস [XI : Semester-II]

লেখকঃ- ওবাইদুর রহমান (লালগোলা, মুর্শিদাবাদ)
তথ্যসূত্রঃ- Wikipedia ; Vikaspedia ; নিউজ ১৮ বাংলা ; Asianet News বাংলা ; প্রথম আলো ; আনন্দবাজার পত্রিকা ; আজতক বাংলা ; দৈনিক সংগ্ৰাম ; আজকাল পত্রিকা

ভৌগোলিক প্রবন্ধ : লিঙ্গ বৈষম্য এবং নারীর অধিকার

4 thoughts on “Padma River’s Hilsa of Murshidabad

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!