National Integration Day
জাতীয় সংহতি দিবস (National Integration Day)

আজ ১৯ শে নভেম্বর (19 November), জাতীয় সংহতি দিবস (National Integration Day)। প্রতি বছর ভারতে ১৯ শে নভেম্বর তারিখটি জাতীয় সংহতি দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯ শে নভেম্বর হল ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী (Indira Gandhi) -এর জন্মদিন। ১৯১৭ সালের ১৯ শে নভেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৬ সালের ২৪ শে জানুয়ারি থেকে ১৯৭৭ সালের ২৪ শে মার্চ এবং ১৯৮০ সালের ১৪ ই জানুয়ারি থেকে ১৯৮৪ সালের ৩১ শে অক্টোবর পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ভারতের লৌহ মানবী (Iron Lady of India) রূপে পরিচিত। ১৯৮৪ সালের ৩১ শে অক্টোবর তিনি নিজের দেহরক্ষীদের গুলিতে নিহত হন। ১৯৮৫ সালে প্রথমবার জাতীয় সংহতি দিবস পালন করা হয়। জাতীয় সংহতি দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : ভারতের বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, জাতির মানুষের মধ্যে ঐক্য, শান্তি ও সম্প্রীতি প্রচার করা এবং ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা ও সাম্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের চেতনা শক্তিশালী করা।
জাতীয় সংহতি (National Integration) হল কোনো দেশের নাগরিকদের মধ্যেকার একতা ও অভিন্ন পরিচয়ের চেতনা। জাতীয় সংহতির মূল উদ্দেশ্য হল — একটি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ সমাজ গঠন করা এবং বৈচিত্র্যের মধ্যে সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখা। জাতীয়তাবাদ (Nationalism) -এর এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল জাতীয় সংহতি, যা কোনো দেশের স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য। আধুনিকীকরণ ও রাজনৈতিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় জাতীয় সংহতি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় সংহতি হল সেই প্রক্রিয়া, যার দ্বারা এমন একটি জাতীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা সৃষ্টি করা হয়, যা সকল আঞ্চলিক ব্যবস্থাকে অধীন বা অঙ্গীভূত করে ফেলে। একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সম্পর্কযুক্ত জনগোষ্ঠী যখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়, তখন তাকে জাতীয় সংহতি বলা হয়। কোনাে দেশের মানুষ যখন জাতিভেদের সীমা, ভৌগােলিক সীমা, অর্থসংগতির সীমা, সাম্প্রদায়িকতার সীমা অতিক্রম করে নিজেদের মধ্যে ঐক্যবােধ ও চেতনাকে জাগিয়ে তােলে, তখন জাতীয় সংহতি গড়ে ওঠে।
উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে ভারতে জাতীয় সংহতি পরিষদ (National Integration Council) গঠন করা হয়। জাতীয় সংহতির জন্য বাধাগুলি হল — (১) ধর্মীয় আবেগ ও সাম্প্রদায়িকতা (২) জাতিভেদ প্রথা, অস্পৃশ্যতা ও বর্ণবৈষম্য (৩) ভাষা বৈচিত্র্য ও ভাষা বৈষম্য (৪) সংকীর্ণ প্রাদেশিকতা (৫) রাজনৈতিক কোন্দল (৬) অর্থনৈতিক অসাম্য (৭) অধিক নিরক্ষরতা (৮) বেকারত্ব (৯) ক্ষমতাস্পৃহা (১০) বিদেশি শক্তির মদত ইত্যাদি। ভারতের মতো বৈচিত্র্যময় দেশে ঐক্য ও স্থিতিশীলতার জন্য জাতীয় সংহতি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় সংহতি সামাজিক কাঠামোকে শক্তিশালী করে। জাতীয় সংহতি সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ এবং অধিকার নিশ্চিত করে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতীয় নিরাপত্তায় জাতীয় সংহতি গুরুত্বপূর্ণ।
Pingback: World Children’s Day - ভূগোলিকা-Bhugolika