International Polar Bear Day
আন্তর্জাতিক মেরু ভালুক দিবস (International Polar Bear Day)
আজ ২৭ শে ফেব্রুয়ারি (27 February), আন্তর্জাতিক মেরু ভালুক দিবস (International Polar Bear Day)। প্রতি বছর ২৭ শে ফেব্রুয়ারি তারিখটি আন্তর্জাতিক মেরু ভালুক দিবস রূপে পালিত হয়। ১৯৯৪ সালে অলাভজনক মেরু ভালুক সংরক্ষণ সংস্থা ‘মেরু ভালুক আন্তর্জাতিক‘ (Polar Bears International/PBI) স্থাপিত হয়। মেরু ভালুক আন্তর্জাতিক সংস্থার উদ্যোগে ২০০৪ সালে প্রথমবার আন্তর্জাতিক মেরু ভালুক দিবস পালিত হয়। আন্তর্জাতিক মেরু ভালুক দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : মেরু ভালুকের ওপর বিশ্ব উষ্ণায়ন ও হ্রাসকৃত সমুদ্রের বরফের প্রভাব এবং মেরু ভালুক সংরক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। মেরু ভালুক (Polar Bear) হল সুমেরু (উত্তর মেরু) এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলের এক বৃহৎ ভালুক। মেরু ভালুক প্রধানত গ্রিনল্যান্ড, আলাস্কা (আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র), কানাডা ও রাশিয়ার সুমেরু সংলগ্ন অঞ্চল, নরওয়ের স্বালবার্ড দ্বীপপুঞ্জে দেখা যায়।
স্তন্যপায়ী শ্রেণীর অন্তর্গত মেরু ভালুকের বৈজ্ঞানিক নাম আরসাস মেরিটিমাস (Ursus maritimus)। মেরু ভালুক হল পৃথিবীর বৃহত্তম জীবিত ভালুক প্রজাতি (Largest Extant Bear Species) এবং বিশ্বের বৃহত্তম স্থলজ মাংসাশী প্রাণী (Largest Land Carnival)। IUCN -এর সংকটাপন্ন (Vulnerable) শ্রেণীর অন্তর্গত মেরু ভালুকের বর্তমান সংখ্যা ২২ থেকে ৩১ হাজার। মেরু ভালুক পূর্বে সাদা ভালুক (White Bear), তুষার ভালুক (Ice Bear), সমুদ্র ভালুক (Sea Bear), গ্রিনল্যান্ড ভালুক (Greenland Bear) ইত্যাদি নামে পরিচিত ছিল। ১৭৭১ সালে প্রকৃতিবিদ টমাস পেন্যান্ট মেরু ভালুক (Polar Bear) নামকরণ করেন। সাধারণত, পুরুষ মেরু ভালুকের দেহের দৈর্ঘ্য ৬.৬ থেকে ৮.২ ফুট এবং ওজন ৩০০ থেকে ৮০০ কেজি হয়। স্ত্রী মেরু ভালুকের দেহের দৈর্ঘ্য ৫.৯ থেকে ৬.৬ ফুট এবং ওজন ১৫০ থেকে ৩০০ কেজি হয়। মেরু ভালুকের গায়ে সাদা, পুরু (২০ সেমি) পশম থাকে। মেরু ভালুকের ত্বকের নিচে ৫-১০ সেমি পুরু চর্বির স্তর থাকে।
মেরু ভালুক প্রতি বছর ৩৫০০ থেকে ৩৮০০০ বর্গকিমি এলাকাতে বিচরণ করে। মেরু ভালুক দৈনিক গড়ে ১২ কিমি গমন করতে পারে। মেরু ভালুক গড়ে ৫.৫ কিমি/ঘন্টা গতিবেগে দৌড়াতে পারে। সুমেরু অঞ্চলের এক শীর্ষ শিকারী (Apex Predator) হল মেরু ভালুক এবং এদের প্রধান খাদ্য হল সিল (Seal)। বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে জলবায়ু পরিবর্তন হল মেরু ভালুকের জন্য এক বিরাট হুমকি। মেরু ভালুকের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান বিপদ হল আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে অপুষ্টি বা অনাহার। দ্য রয়্যাল সোসাইটির ‘বায়োলজি লেটার্স‘ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা (২০১৬) অনুসারে, আগামী তিন প্রজন্মে মেরু ভালুকের সংখ্যা ৩০-৫০% হ্রাস পেতে পারে। নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা (২০২০) অনুসারে, আগামী ২১০০ সাল নাগাদ মেরু ভালুকের ৮০% বিলুপ্ত হয়ে যাবে। সুমেরু অঞ্চলের বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য রক্ষায় মেরু ভালুক সংরক্ষণ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
Pingback: World NGO Day - ভূগোলিকা-Bhugolika