International Day of Rural Women
আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস (International Day of Rural Women)

আজ ১৫ ই অক্টোবর (15 October), আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস (International Day of Rural Women)। প্রতি বছর ১৫ ই অক্টোবর তারিখটি আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালের ৮ ই মার্চ উইমেন’স্ ওয়ার্ল্ড সামিট ফাউন্ডেশন (Women’s World Summit Foundation) স্থাপিত হয়। ১৯৯৫ সালের ১৫ ই অক্টোবর তারিখে উইমেন’স্ ওয়ার্ল্ড সামিট ফাউন্ডেশন (WWSF) -এর উদ্যোগে প্রথমবার আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালিত হয়। ২০০৭ সালের ১৮ ই ডিসেম্বর তারিখে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ১৫ ই অক্টোবর তারিখটি আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস হিসাবে গৃহীত হয়। ২০০৮ সালের ১৫ ই অক্টোবর রাষ্ট্রসংঘ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রথম আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালিত হয়। আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও গ্রামীণ উন্নয়নে গ্রামীণ নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে স্বীকৃতি প্রদান করা। আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবসের লক্ষ্য হল — লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা, ভূমি ও আর্থিক পরিষেবার মতো সম্পদে গ্রামীণ নারীদের অধিগমন উন্নত করা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা এবং তাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য সহায়তা বৃদ্ধি করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবসের থিম হল : ‘Rural Women and Girls Building Climate Resilience’।
যেসব নারী গ্রামীণ এলাকায় বসবাস ও কাজ করেন, তাদের গ্রামীণ নারী (Rural Woman) বলা হয়। গ্রামীণ নারীদের বেশিরভাগই জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ ও কৃষির উপর নির্ভরশীল এবং পেশাগত দিক থেকে তারা কৃষক, উদ্যোক্তা অথবা বিধিবৎ বা অ-বিধিবৎ কৃষি শ্রমিক। গ্রামীণ নারী বিশ্বের জনসংখ্যার ২৫% এবং বিশ্বের কৃষি কর্মীর ৪৩% হওয়া সত্ত্বেও, তারা মাত্র ২০% জমির মালিক। আর্থিক পরিষেবা, সামাজিক সুরক্ষা এবং শ্রমিক সমিতি (Trade Union) অধিগমন করার ক্ষেত্রে গ্রামীণ নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি বাধার সম্মুখীন হন এবং তাদের বেতন পুরুষদের তুলনায় গড়ে ৪০% কম (সূত্র : FAO)। গ্রামীণ নারীদের অনেকেই এমন এলাকায় বাস করেন যেখানে স্বাস্থ্যসেবা, জল এবং শিক্ষার সুযোগ খুবই কম। যদিও গ্রামীণ নারীরা তাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তবুও তারা আইন ও সামাজিক রীতিনীতির অধীন, যা তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে। গ্রামীণ নারীরা যে কাজগুলি করেন, তার মধ্যে রয়েছে — কৃষি পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিক্রয়। এছাড়া তারা গৃহস্থালির কাজ এবং পরিবারের দেখাশোনা করেন, কোনোপ্রকার পারিশ্রমিক ছাড়াই।
রাষ্ট্রসংঘের তথ্যমতে, যদি পুরুষদের মতো নারীদেরও উৎপাদনশীল সম্পদে সমান সুযোগ থাকত, তাহলে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন ২০-৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেত, যা অতিরিক্ত ১০ থেকে ১৫ কোটি মানুষকে খাদ্য সরবরাহ করত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) -এর তথ্যমতে, গ্রামীণ নারীরা গ্রামীণ স্বাস্থ্য ও সেবা ব্যবস্থায় মুখ্য ভূমিকা পালন করে। বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের ৬৭% এবং আনুমানিক ৭০% সমাজকল্যাণ স্বাস্থ্যসেবা কর্মী (Community Health Workers) নারী। সমাজকল্যাণ স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা অনেকক্ষেত্রে একমাত্র স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, যা গ্রামীণ মানুষ ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও বিকাশে গ্রামীণ নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারা প্রাকৃতিক সম্পদ ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানের রক্ষক।
Pingback: World Food Day - ভূগোলিকা-Bhugolika