International Day of Peace
আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস (International Day of Peace)
আজ ২১ শে সেপ্টেম্বর (21 September), আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস (International Day of Peace), যা বিশ্ব শান্তি দিবস (World Peace Day) নামেও পরিচিত। প্রতি বছর ২১ শে সেপ্টেম্বর তারিখটি আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালের ৩০ শে নভেম্বর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার (অর্থাৎ রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের সূচনার দিন) -কে আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। ১৯৮২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার অর্থাৎ ২১ শে সেপ্টেম্বর তারিখে প্রথমবার আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস পালিত হয়। ২০০১ সালের ৭ ই সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ সুনির্দিষ্টভাবে ২১ শে সেপ্টেম্বর তারিখটি আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : যুদ্ধ ও সহিংসতা বন্ধ করা এবং বিশ্ব শান্তি (World Peace) প্রতিষ্ঠা করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক শান্তি দিবসের থিম হল : ‘Act Now for a Peaceful World’।
শান্তি (Peace) -এর আক্ষরিক অর্থ হল সংঘাত, যুদ্ধ বা সহিংসতার অনুপস্থিতি এবং সম্প্রীতি ও সহযোগিতামূলক এক পরিবেশ নির্মাণ করা। সামাজিক অর্থে, শান্তি শব্দটি ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাতের অভাব (যেমন – যুদ্ধ) এবং সহিংসতার ভয় থেকে মুক্তি বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী (Mohandas Karamchand Gandhi) -এর মতে —সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক সীমানা পেরিয়ে সহানুভূতিশীল সংলাপ এবং অক্লান্ত যত্নের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফলাফল হল শান্তি। মার্টিন লুথার কিং, জুনিয়র (Martin Luther King, Junior) -এর মতে — শান্তি শুধুমাত্র যুদ্ধ বা সংঘাতের অনুপস্থিতি নয়, বরং এটি ন্যায়বিচার, সমতা এবং মানবাধিকারের এক সক্রিয় অবস্থা। অবিচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে অহিংসভাবে লড়াই করে সমাজের সকল মানুষের মধ্যে সংযোগ ও ভালোবাসার সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমেই শান্তি অর্জন করা যায়। জোহান গাল্টুং (Johan Galtung) -এর মতে — শান্তি হল সংঘাতের অনুপস্থিতি। শান্তি হল একটি সামাজিক লক্ষ্য, যা জটিল কিন্তু অর্জন করা অসম্ভব নয়। জন এফ. কেনেডি (John F. Kennedy) -এর মতে — শান্তি হল এক প্রক্রিয়া, সমস্যা সমাধানের এক পদ্ধতি।
বিশ্ব শান্তি (World Peace) -এর অর্থ হল — জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বের সকল মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির এক আদর্শ অবস্থা, যা যুদ্ধের অবসান, মানবাধিকারের সুরক্ষা, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও স্থিতিশীল উন্নয়নের মাধ্যমে অর্জিত হয়। বিশ্ব শান্তি অর্জনের মূল বিষয়গুলি হল — শান্তি ও সম্প্রীতি (Peace & Harmony), মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার (Human Rights & Justice), নিরস্ত্রীকরণ (Disarmament), আন্তর্জাতিক সহযোগিতা (International Cooperation), দারিদ্র্য দূরীকরণ ও উন্নয়ন (Poverty Eradication & Development)। বিশ্ব শান্তি অর্জনের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা প্রচার করা, কূটনৈতিক মধ্যস্থতার মাধ্যমে উত্তেজনা হ্রাস করা এবং পরিবেশের সুরক্ষা ও স্থিতিশীল উন্নয়নের মাধ্যমে এক শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ার প্রচেষ্টা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রতিবন্ধকতাগুলি হল — সামরিক ও অর্থনৈতিক অসমতা, সীমান্ত জটিলতা, ধর্মীয় ও জাতিগত সংঘাত, ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ, সম্পদ নিয়ন্ত্রণের কৌশল ইত্যাদি।
Pingback: World Rhino Day - ভূগোলিকা-Bhugolika