International Day of Democracy
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস (International Day of Democracy)
আজ ১৫ ই সেপ্টেম্বর (15 September), আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস (International Day of Democracy)। প্রতি বছর ১৫ ই সেপ্টেম্বর তারিখটি আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ১৫ ই সেপ্টেম্বর তারিখে আন্তঃসংসদীয় সমিতি (Inter-Parliamentary Union) কর্তৃক গণতন্ত্রের উপর সর্বজনীন ঘোষণাপত্র (Universal Declaration on Democracy) গৃহীত হয়। এই ঘোষণাপত্র গণতন্ত্রের নীতি, গণতান্ত্রিক সরকারের উপাদান ও প্রয়োগ এবং গণতন্ত্রের আন্তর্জাতিক পরিধি সুনিশ্চিত করে। তারই স্মরণে, ২০০৭ সালের ৮ ই নভেম্বর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ১৫ ই সেপ্টেম্বর তারিখটি আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস হিসাবে গৃহীত হয়। ২০০৮ সালের ১৫ ই সেপ্টেম্বর তারিখে প্রথমবার আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস পালিত হয়। আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : গণতন্ত্রের নীতিমালা পৃষ্ঠপোষকতা করা, গণতন্ত্রের নীতিমালার প্রচার করা এবং গণতন্ত্র সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের থিম হল : ‘Achieving gender equality, action by action’।
গণতন্ত্র (Democracy) -এর আক্ষরিক অর্থ হল জনগণের শাসন। গ্রিক শব্দ ‘ডেমোস’ (Demos) অর্থাৎ জনসাধারণ এবং ‘ক্রাটিয়া’ (Kratia) অর্থাৎ শাসন বা ক্ষমতা থেকে ডেমোক্রেসি (Democracy) অর্থাৎ গণতন্ত্র শব্দটি উদ্ভূত হয়েছে। সুতরাং গণতন্ত্র হল জনগণ পরিচালিত শাসনব্যবস্থা। যে শাসন ব্যবস্থাতে জনগণের হাতে ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে, তাকে গণতন্ত্র বলে। গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস (Herodotus) প্রদত্ত গণতন্ত্রের সংজ্ঞা হল : ‘গণতন্ত্র হচ্ছে এমন এক ধরনের শাসন ব্যবস্থা, যেখানে শাসন ক্ষমতা কোন শ্রেণীর উপর ন্যস্ত না থেকে বরং সমাজের সকল সদস্যের হাতে ন্যস্ত থাকে।’ লর্ড ব্রাইস (Lord Bryce) -এর মতে, গণতন্ত্র হচ্ছে সেই ধরনের শাসন ব্যবস্থা যাতে রাষ্ট্রশাসন আইনত কোনো বিশেষ শ্রেণী বা শ্রেণীসমূহের হাতে না থেকে সমাজের নাগরিকদের হাতে থাকে। সি. এফ. স্ট্রং (C. F. Strong) -এর মতে, ‘শাসিতগণের সক্রিয় সম্মতির উপর যে সরকার প্রতিষ্ঠিত তাকে গণতন্ত্র বলে।’ কার্ল ফ্রেডরিক গেইজার (Karl Frederick Geiser) -এর মতে, ‘গণতন্ত্র হল রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন সংঘটনের জন্য স্বীকৃত একটি প্রধান উপায়।’ আব্রাহাম লিঙ্কন (Abraham Lincoln) প্রদত্ত গণতন্ত্রের সংজ্ঞা হল : ‘গণতন্ত্র হল জনগণের, জনগণের জন্য এবং জনগণের দ্বারা সরকার।’
গণতন্ত্র প্রধানত ২ প্রকার — (১) প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র বা প্রকৃত গণতন্ত্র (Direct Democracy / Pure Democracy) : উদাহরণ — সুইজারল্যান্ডের অ্যাপেনজেল ইনারহোডেন (Appenzell Innerrhoden) এবং গ্লারউস (Glarus) ক্যান্টনে প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র বা প্রকৃত গণতন্ত্র প্রচলিত রয়েছে। (২) পরোক্ষ গণতন্ত্র বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র (Indirect Democracy / Representative Democracy) : ভারত, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি দেশে পরোক্ষ গণতন্ত্র বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র প্রচলিত রয়েছে। উল্লেখ্য, জনসংখ্যা অনুসারে ভারত হল পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র (World’s Largest Democracy)। আধুনিক যুগে, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র হল পৃথিবীর প্রাচীনতম গণতন্ত্র (World’s Oldest Democracy in Modern Age)। গণতন্ত্রের গুণাবলী হল — (১) সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার গুরুত্ব (২) ন্যায় ও সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থা (৩) সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও সার্বিক কল্যাণ সাধনের লক্ষ্য (৪) রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধির সহায়ক (৫) তুলনামূলক স্থায়ী ও স্থিতিশীল শাসনব্যবস্থা।
Pingback: World Ozone Day - ভূগোলিকা-Bhugolika