Goldschmidt Classification
গোল্ডশ্মিড্ট শ্রেণীবিভাগ (Goldschmidt Classification)
আপনাকে ভূগোলিকা-Bhugolika -এর ‘ভূগোল বিচিত্রা’ বিভাগে স্বাগত জানাই। আজকের পোস্ট : গোল্ডশ্মিড্ট শ্রেণীবিভাগ (Goldschmidt Classification)।
▶️▶️▶️ পৃথিবীর ভূ-গঠন সংক্রান্ত বিষয়ে গোল্ডশ্মিড্ট শ্রেণীবিভাগ (Goldschmidt Classification) একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গোল্ডশ্মিড্ট শ্রেণীবিভাগ হল একটি ভূ-রাসায়নিক শ্রেণীবিভাগ (Geochemical Classification), যা ১৯২৩ সালে নরওয়েজিয়ান খনিজবিদ ভিক্টর মরিৎজ গোল্ডশ্মিড্ট (Victor Moritz Goldschmidt) কর্তৃক প্রকাশিত হয়। উল্লেখ্য, ভিক্টর মরিৎজ গোল্ডশ্মিড্ট (১৮৮৮-১৯৪৭) ‘আধুনিক ভূ-রসায়নবিদ্যার প্রতিষ্ঠাতা’ (Founder of Modern Geochemistry) রূপে পরিচিত। গোল্ডশ্মিড্ট শ্রেণীবিভাগে পৃথিবীর রাসায়নিক উপাদানগুলি ৪টি শ্রেণীতে বিভক্ত রয়েছে। যথা — অ্যাটমোফাইল উপাদান (Atmophile Elements), লিথোফাইল উপাদান (Lithophile Elements), চালকোফাইল উপাদান (Chalcophile Elements) এবং সিডেরোফাইল উপাদান (Siderophile Elements)।
(১) অ্যাটমোফাইল উপাদান (Atmophile Elements) : যেসব রাসায়নিক উপাদান ভূপৃষ্ঠে কিংবা ভূপৃষ্ঠের ওপরে অবস্থান করে এবং ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা ও চাপে তরল এবং/কিংবা গ্যাসীয় রূপে পাওয়া যায়, তাদের অ্যাটমোফাইল উপাদান বলে। অ্যাটমোফাইল (Atmophile) শব্দটি দুটি গ্রিক শব্দ ‘অ্যাটমোস’ (Atmós) অর্থাৎ বাষ্প (Vapor) বা ধোঁয়া (Smoke) এবং ‘ফাইল’ (Phile) অর্থাৎ প্রিয় (Beloved) থেকে এসেছে। অর্থাৎ অ্যাটমোফাইল শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল গ্যাস প্রিয়। অ্যাটমোফাইল উপাদান ‘উদ্বায়ী উপাদান’ (Volatile Elements) নামেও পরিচিত। অ্যাটমোফাইল উপাদানগুলি হল — হাইড্রোজেন (H), কার্বন (C), নাইট্রোজেন (N), হিলিয়াম (He), নিয়ন (Ne), আর্গন (Ar), ক্রিপটন (Kr), জেনন (Xe), রেডন (Rn)।
(২) লিথোফাইল উপাদান (Lithophile Elements) : যেসব রাসায়নিক উপাদান ভূপৃষ্ঠে কিংবা ভূপৃষ্ঠের নিকটে অবস্থান করে এবং সহজেই অক্সিজেনের সাথে মিশে যৌগ তৈরি করে, তাদের লিথোফাইল উপাদান বলে। লিথোফাইল (Lithophile) শব্দটি দুটি গ্রিক শব্দ ‘লিথো’ (Litho) অর্থাৎ শিলা বা প্রস্তর (Stone) এবং ‘ফাইল’ (Phile) অর্থাৎ প্রিয় (Beloved) থেকে এসেছে। অর্থাৎ লিথোফাইল শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল শিলা প্রিয়। লিথোফাইল উপাদানগুলি হল — অ্যালুমিনিয়াম (Al), বোরন (B), বেরিয়াম (Ba), বেরিলিয়াম (Be), ব্রোমিন (Br), ক্যালসিয়াম (Ca), ক্লোরিন (Cl), ক্রোমিয়াম (Cr), সিজিয়াম (Cs), ফ্লোরিন (F), আয়োডিন (I), হ্যাফনিয়াম (Hf), পটাশিয়াম (K), লিথিয়াম (Li), ম্যাগনেসিয়াম (Mg), সোডিয়াম (Na), নাইওবিয়াম (Nb), অক্সিজেন (O), ফসফরাস (P), রুবিডিয়াম (Rb), স্ক্যান্ডিয়াম (Sc), সিলিকন (Si), স্ট্রন্টিয়াম (Sr), ট্যান্টালাম (Ta), থোরিয়াম (Th), টাইটানিয়াম (Ti), ইউরেনিয়াম (U), ভ্যানাডিয়াম (V), ইট্রিয়াম (Y), জিরকোনিয়াম (Zr), টাংস্টেন (W) এবং বিরল মৃত্তিকা মৌল (Rare-Earth Elements/REE)।
(৩) চালকোফাইল উপাদান (Chalcophile Elements) : যেসব রাসায়নিক উপাদান ভূপৃষ্ঠে কিংবা ভূপৃষ্ঠের নিকটে অবস্থান করে এবং সহজেই সালফার ও অন্যান্য চালকোজেন উপাদানের সাথে মিশে যৌগ তৈরি করে, তাদের চালকোফাইল উপাদান বলে। চালকোফাইল (Chalcophile) শব্দটি দুটি গ্রিক শব্দ ‘খালকস’ (Khalkós) অর্থাৎ তামা (Copper) বা আকরিক (Ore) এবং ‘ফাইল’ (Phile) অর্থাৎ প্রিয় (Beloved) থেকে এসেছে। অর্থাৎ চালকোফাইল শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল আকরিক প্রিয়। চালকোফাইল উপাদানগুলি হল — রূপা (Ag), আর্সেনিক (As), বিসমাথ (Bi), ক্যাডমিয়াম (Cd), তামা (Cu), গ্যালিয়াম (Ga), জার্মেনিয়াম (Ge), পারদ (Hg), ইন্ডিয়াম (In), সীসা (Pb), সালফার (S), অ্যান্টিমনি (Sb), সেলেনিয়াম (Se), টিন (Sn), টেলুরিয়াম (Te), থ্যালিয়াম (Ti), দস্তা (Zn)।
(৪) সিডেরোফাইল উপাদান (Siderophile Elements) : যেসব রূপান্তর ধাতু (Transition Metals) গ্রহীয় বিভেদন (Planetary Differentiation) -এর সময় পৃথিবীর কেন্দ্রের নিকট অবস্থান করে এবং কঠিন দ্রবণ হিসাবে কিংবা গলিত অবস্থায় সহজেই লোহাতে দ্রবীভূত হয়, তাদের সিডেরোফাইল উপাদান বলে। সিডেরোফাইল (Siderophile) শব্দটি দুটি গ্রিক শব্দ ‘সিডেরস’ (Sídēros) অর্থাৎ লোহা (Iron) এবং ‘ফাইল’ (Phile) অর্থাৎ প্রিয় (Beloved) থেকে এসেছে। অর্থাৎ সিডেরোফাইল শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হল লোহা প্রিয়। সিডেরোফাইল উপাদানগুলি হল — রুথেনিয়াম (Ru), রোডিয়াম (Rh), প্যালাডিয়াম (Pd), রেনিয়াম (Re), অসমিয়াম (Os), ইরিডিয়াম (Ir), প্ল্যাটিনাম (Pt), সোনা (Au), কোবাল্ট (Co), নিকেল (Ni)।
(Goldschmidt Classification)
Pingback: Topic - Hotspot - ভূগোলিকা-Bhugolika
Pingback: TGT-PGT GEOGRAPHY PART-5 - ভূগোলিকা-Bhugolika