Asia’s Cleanest River Dawki
এশিয়ার পরিষ্কারতম নদী ডাউকি
ভূগোলিকা-Bhugolika -এর ‘ভৌগোলিক প্রবন্ধ’ বিভাগে আপনাকে স্বাগত জানাই। ভৌগোলিক প্রবন্ধে আমরা ভূগোলের নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর বিস্তারিত তথ্য পেয়ে থাকি, যা আমাদের ভৌগোলিক জ্ঞানের বিকাশে সহায়ক হয়। আজকের ভৌগোলিক প্রবন্ধ : Asia’s Cleanest River Dawki । আশাকরি, এই প্রবন্ধের মাধ্যমে আপনি মেঘালয়ের ডাউকি নদী সম্পর্কে বিশদ তথ্য পাবেন।

পৃথিবীর অধিকাংশ নদীই আজ কমবেশি দূষিত। যে নদীকে কেন্দ্র করে মানবসভ্যতা বিকশিত হয়েছিল, আজ সেই নদীই মানবিক কার্যকলাপে স্বাভাবিকতা হারিয়েছে। বর্তমানে মনুষ্যসৃষ্ট দূষণের কারণে স্বচ্ছসলিলা নদী সত্যিই দুর্লভ। নদী সংস্কারের প্রচারণা চালাচ্ছে সরকার ও বেসরকারী কিছু পরিবেশপ্রেমী সংস্থা। তবে উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয় রাজ্যে রয়েছে একটি নদী, যা এশিয়ার সবচেয়ে পরিষ্কার নদী (Cleanest River in Asia) -এর তকমা পেয়েছে। এই নদীর নাম ‘উমনগোট নদী’ (Umngot River), তবে এটি ‘ডাউকি নদী’ (Dawki River) নামে অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। (Asia’s Cleanest River Dawki)
ভৌগোলিক প্রবন্ধ : আলফা, বিটা ও গামা বৈচিত্র্য
উমনগোট নদীটি মেঘালয়ের পূর্ব খাসি পার্বত্য অঞ্চলে লুম শিলং শৃঙ্গের পূর্বাঞ্চল থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। উৎস অঞ্চল থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশের সিলেট জেলায় প্রবেশ করেছে। মেঘালয়ে উমনগোট নদীর দৈর্ঘ্য ৮২ কিমি। উমনগোট নদীটি খাসি এবং জয়ন্তিয়া পাহাড়ের মাঝে প্রাকৃতিক সীমানা রূপে প্রবাহিত হয়েছে। পাহাড়ি নদী হওয়ায় এর গভীরতা খুব বেশি নয়, মাত্র ১৫ ফুট। উমনগোট এশিয়ার পরিষ্কারতম নদী। কাচের মতো পরিষ্কার এই নদীর জলে উপর থেকে নদীর তলদেশ পরিষ্কার ভাবে দেখা যায়। এই নদীর জল এতটাই পরিষ্কার যে উপরে কোনও নৌকায় ভেসে যাওয়ার সময় তলদেশের নুড়ি-পাথরও পরিষ্কার দেখতে পাওয়া যায়।
এই নদীর ওপর বাংলাদেশে সীমান্তের নিকটে একটি ঝুলন্ত সেতু রয়েছে, যা ‘ডাউকি সেতু’ নামে পরিচিত। ১৯৩২ সালে ব্রিটিশরা এটি তৈরি করেছিল। ডাউকি নদীকে সবচেয়ে সুন্দর লাগে নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ। ওই সময় বহু পর্যটকের সমাগম দেখা যায়। বিভিন্ন সময়ে সামাজিক গণমাধ্যমগুলিতে এই স্বচ্ছ নদীর ছবি অনেকে তুলে ধরেছেন, যা নদীটি সম্পর্কে জনমানসে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। এই নদীর ছবি দেখে আপনার মনে হতেই পারে, যেন নৌকা জলেতে নয় যেন হাওয়াতে ভেসে আছে। নদীর জল এতটাই পরিষ্কার যে নদীবক্ষের প্রতিটা পাথরের টুকরোই বোঝা যায়, এমনকি নদীর জলের দিকে আপনার স্বচ্ছ প্রতিচ্ছবিও দেখতে পাবেন।
ভৌগোলিক প্রবন্ধ : গোয়ার খজান কৃষি
উমনগোট নদী তীরবর্তী প্রধান জনপদগুলি হল : ডাউকি, শোনেংপেডাং, উমসিয়েম, দারাং প্রভৃতি। উমসিয়েমে প্রতিবছর মার্চ-এপ্রিল মাসে নৌকা দৌড় প্রতিযোগিতা হয়। প্রায় ৮০০ বর্গকিমি কৃষিক্ষেত্রের সেচের জল জোগান দেয় খরস্রোতা ডাউকি নদী। স্থানীয় অধিবাসীদের মৎস্য শিকারের প্রধান কেন্দ্রই হল এই নদী। উল্লেখ্য, ডাউকি নদীর বালাদেশ সীমান্ত থেকে নোংরিংকোহ্ পর্যন্ত ২০ কিমি অংশটিকে ভারত সরকার ১০৬ নং জাতীয় জলপথ (National Waterways) রূপে ঘোষণা করেছে। এই নদীর জল এতটা স্বচ্ছ কেন? উমনগোট নদীটি যে অঞ্চলের ওপর প্রবাহিত হয়েছে, তা দুর্গম অরণ্যসঙ্কুল পাহাড়ি অঞ্চল। এই অঞ্চলে মানবসৃষ্ট দূষণের পরিসর প্রায় নেই। তাই দূষণমুক্ত হওয়ার কারণেই জল এতটা স্বচ্ছ।
স্বচ্ছ জলের ডাউকি নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যরূপ চাক্ষুস করতে চান? কিভাবে যাবেন? প্রথমে আসামের গুয়াহাটি হয়ে মেঘালয়ের রাজধানী শিলং-এ পৌঁছান। সড়কপথে শিলং থেকে ডাউকির দূরত্ব ৯৫ কিমি। বাংলাদেশি পর্যটকরা সিলেট থেকে তামাবিল বর্ডার পার হয়ে ডাউকি আসতে পারেন।
উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল নির্যাস [XI : Semester-II]
লেখিকাঃ- চৈতালী মাহাত (বিশপুরিয়া, হুড়া, পুরুলিয়া)
তথ্যসূত্রঃ- উইকিপিডিয়া ; আনন্দবাজার পত্রিকা ; বাংলা ট্রিবিউন ; কালের কন্ঠ ; BBC ; Inland Waterways Authority of India (IWAI)
Pingback: Tusu Festival of Rarh Region - ভূগোলিকা-Bhugolika
Pingback: Vishnu's Dashavatara & Evolutionism of Darwin - ভূগোলিকা-Bhugolika
Pingback: Banbibi - Goddess of Sundarban - ভূগোলিকা-Bhugolika
Very Good
ধন্যবাদ ❤️
Nice One…