World AIDS Day
বিশ্ব এইডস দিবস (World AIDS Day)

আজ ১ লা ডিসেম্বর (1 December), বিশ্ব এইডস দিবস (World AIDS Day)। প্রতি বছর ১ লা ডিসেম্বর তারিখটি বিশ্ব এইডস দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) -এর দুই আধিকারিক জেমস ডবলিউ. বান (James W. Bunn) এবং টমাস নেটার (Thomas Netter) সর্বপ্রথম বিশ্ব এইডস দিবস পালনের পরিকল্পনা করেন। UNAIDS-এর তৎকালীন পরিচালক ড: জোনাথন মান (Dr. Jonathan Mann) এই প্রস্তাব অনুমোদন করেন এবং ১ লা ডিসেম্বর তারিখটি বিশ্ব এইডস দিবস রূপে গৃহীত হয়। ১৯৮৮ সালের ১ লা ডিসেম্বর প্রথমবার বিশ্ব এইডস দিবস পালিত হয়। বিশ্ব এইডস দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : এইচআইভি (HIV) সংক্রমণের বিস্তারের ফলে সৃষ্ট এইডস (AIDS) মহামারী সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং এইডস রোগে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের শোক প্রকাশ করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে বিশ্ব এইডস দিবসের থিম হল : ‘Overcoming Disruption, Transforming the AIDS Response’।
উল্লেখ্য, এইডস (AIDS) হল এইচআইভি (HIV) নামক ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ। HIV -এর পূর্ণরূপ হল হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (Human Immunodeficiency Virus) এবং AIDS -এর পূর্ণরূপ হল অ্যাকোয়ার্ড ইমিউনো-ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম (Acquired Immuno-Deficiency Syndrome)। কোনো ব্যক্তির দেহে এইচআইভি ভাইরাস সংক্রামিত হলে, সেই ব্যক্তির দেহের প্রতিরক্ষাতন্ত্র বা অনাক্রম্যতন্ত্র দুর্বল হতে থাকে এবং আক্রান্ত ব্যক্তি বিভিন্ন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন। ধীরে ধীরে দেহের অনাক্রম্যতন্ত্র অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কাজ করে না, যা এইডস নামে পরিচিত। এইডস রোগীর ওজন অত্যধিক হ্রাস পায়। এখনও পর্যন্ত, মানবদেহ থেকে এইচআইভি ভাইরাস পুরোপুরি দূর করার কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি নেই। তাই এইচআইভি সংক্রমণ হলে এইডস রোগ অনিবার্য। বিনা চিকিৎসায় একজন এইচআইভি সংক্রামিত মানুষ প্রায় ১১ বছর বেঁচে থাকতে পারে। ব্যয়বহুল চিকিৎসার দ্বারা এইচআইভি সংক্রমণ থেকে এইডস রোগ পর্যন্ত সময়কালকে কিছু বছর দীর্ঘায়িত করা যায়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এইডস রোগ সারিয়ে তোলার কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি নেই।
উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম এইডস রোগ শনাক্ত করা হয়। প্রাথমিকভাবে এই নতুন রোগটিকে গ্রিড (GRID : Gay-Related Immune Deficiency) নামে চিহ্নিত করা হয়। ১৯৮২ সালে গ্রিড (GRID) -এর পরিবর্তে এইডস (AIDS) নামকরণ করা হয়। ১৯৮৩ সালে ফ্রাঁসোয়া ব্যারে-সিনোসি (Françoise Barré-Sinoussi) এবং লুক মন্টাগনিয়ার (Luc Montagnier) এইচআইভি ভাইরাস (HIV Virus) আবিষ্কার করেন। এইচআইভি ভাইরাস প্রধানত দুই প্রকার — এইচআইভি-১ (HIV-1) ও এইচআইভি-২ (HIV-2)। আক্রান্ত ব্যক্তির দেহজাত অধিকাংশ তরল ক্ষরণে এইচআইভি ভাইরাস নিষ্কৃত হয়। তবে এইচআইভি শরীরের বাইরে বেশিক্ষণ বাঁচে না। এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমণের কারণগুলি হল — আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত গ্রহণ করা, আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে ব্যবহৃত ইনজেকশনের সিরিঞ্জ বা সূঁচ ব্যবহার করা, আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে অসুরক্ষিত (নিরোধ/কনডম ব্যবহার না করে) যৌন সম্পর্ক করা ইত্যাদি। তবে, শুধুমাত্র স্পর্শ, একসাথে খাওয়া, একই জামাকাপড় পরা, মশার কামড়, মূত্র বা ঘাম দ্বারা কখনো এইচআইভি ছড়ায় না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের শেষে সারা বিশ্বে এইডস রোগীর সংখ্যা ৪০.৮ মিলিয়ন।