National Cancer Awareness Day
জাতীয় ক্যান্সার সচেতনতা দিবস (National Cancer Awareness Day)

আজ ৭ ই নভেম্বর (7 November), জাতীয় ক্যান্সার সচেতনতা দিবস (National Cancer Awareness Day)। প্রতি বছর ভারতে ৭ ই নভেম্বর তারিখটি জাতীয় ক্যান্সার সচেতনতা দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ভারত সরকার ৭ ই নভেম্বর তারিখটি জাতীয় ক্যান্সার সচেতনতা দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। ৭ ই নভেম্বর হল বিজ্ঞানী মেরি কুরি (Marie Curie) -এর জন্মদিন, যিনি প্রথম মহিলা হিসাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর তেজস্ক্রিয়তা উপর গবেষণা ক্যান্সার চিকিৎসায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৪ সালে ভারতে প্রথমবার জাতীয় ক্যান্সার সচেতনতা দিবস পালিত হয়। জাতীয় ক্যান্সার সচেতনতা দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ, শনাক্তকরণ ও চিকিৎসাকে উৎসাহিত করা। জাতীয় ক্যান্সার সচেতনতা দিবস পালনের লক্ষ্য হল — ভারতে ক্যান্সারজনিত অসুস্থতা এবং মৃত্যুকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা।
ক্যান্সার (Cancer) শব্দটি গ্রিক শব্দ কার্কিনস (Karkinos) থেকে এসেছে, যার অর্থ হল কাঁকড়া (Crab) এবং টিউমার (Tumor)। গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটিস (Hippocrates) সর্বপ্রথম ক্যান্সার শব্দটি ব্যবহার করেন। ক্যান্সার বাংলা ভাষায় ‘কর্কট রোগ’ নামে পরিচিত। উল্লেখ্য, অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত রোগসমূহের সমষ্টিকে ক্যান্সার বলে। বিস্তারিত ভাবে বলা যায়, অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজনে সৃষ্ট নিওপ্লাজম (Neoplasm) কলা বা টিউমার যখন ভেদক ক্ষমতাসম্পন্ন হয়, তখন তাকে ম্যালিগন্যান্ট (Malignant) টিউমার বা ক্যান্সার বলে। বর্তমানে ১০০-রও বেশি ধরনের ক্যান্সার চিহ্নিত করা হয়েছে। যেমন — ফুসফুস, স্তন, প্রস্টেট, অগ্ন্যাশয় ও মলাশয়ের ক্যান্সার কার্সিনোমা (Carcinoma) ; হাড়, তরুণাস্থি, চর্বি ও স্নায়ুর ক্যান্সার সার্কোমা (Sarcoma) ; রক্ত কোষের ক্যান্সার লিউকেমিয়া (Leukemia) নামে পরিচিত। ঠিক কি কারণে ক্যান্সার হয়, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে বয়স (বিশেষত ৬০+), খাদ্যাভাস ও জীবনযাপনের ধারা, পারিবারিক ইতিহাস বা জিনগত সম্পর্ক, পেশাগত পরিবেশ ইত্যাদিকে ক্যান্সারের কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। উল্লেখ্য, বিজ্ঞানের যে শাখাতে ক্যান্সারের প্রতিরোধ, নির্ণয়, পর্যবেক্ষণ, অধ্যয়ন ও চিকিৎসা করা হয়, তাকে অঙ্কোলজি (Oncology) বা অর্বুদবিজ্ঞান বলা হয়।
ভারতে ক্যান্সার বৃদ্ধির প্রধান কারণ হল ভারতীয়দের খাদ্যাভ্যাস। যেসব কারণে ভারতে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা হল — অধিক পরিমাণে প্রক্রিয়াজাত খাবার, মিষ্টি পানীয়, উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ ; ধূমপান, জর্দা, খৈনি, পানমশলা সহ অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য সেবন ; মদ্যপান ; বায়ু ও জল দূষণ ; প্লাস্টিকজাত কার্সিনোজেনিক উপাদান ইত্যাদি। ১৯৭৫ সালে ভারতে জাতীয় ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী (National Cancer Control Programme) শুরু হয়। ১৯৮২ সালে ভারতে জাতীয় ক্যান্সার নিবন্ধন কর্মসূচী (National Cancer Registry Programme) শুরু হয়। ভারতে প্রতি বছর গড়ে ৮ লক্ষ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। ভারতে পুরুষদের সমস্ত প্রকার ক্যান্সারের ৩৫-৫০% এবং নারীদের ১৭% হল তামাক-সম্পর্কিত ক্যান্সার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) -এর তথ্য অনুসারে, ভারতে ৭৫ বছর বয়সের আগে পর্যন্ত ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ১০.৬% এবং ওই বয়সে ক্যান্সারে মৃত্যুর ঝুঁকি ৭.২%।
Pingback: National Education Day - ভূগোলিকা-Bhugolika