World Food Day
বিশ্ব খাদ্য দিবস (World Food Day)

আজ ১৬ ই অক্টোবর (16 October), বিশ্ব খাদ্য দিবস (World Food Day)। প্রতি বছর খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) -এর উদ্যোগে ১৬ অক্টোবর তারিখটি বিশ্ব খাদ্য দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৪৫ সালের ১৬ ই অক্টোবর তারিখে রাষ্ট্রসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (Food and Agriculture Organization) স্থাপিত হয়। ১৯৭৯ সালে খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০-তম সাধারণ সম্মেলনে হাঙ্গেরির তৎকালীন খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. প্যাল রোমানি (Dr. Pál Romány) প্রস্তাব অনুসারে ১৬ ই অক্টোবর তারিখটি বিশ্ব খাদ্য দিবস হিসাবে গৃহীত হয় এবং ১৯৮১ সালের ১৬ ই অক্টোবর তারিখে প্রথমবার বিশ্ব খাদ্য দিবস পালিত হয়। বিশ্ব খাদ্য দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং সকলের জন্য পুষ্টিকর খাদ্যের অধিগমনযুক্ত এক বিশ্ব গড়ে তোলা। বিশ্ব খাদ্য দিবস পালনের লক্ষ্য হল — ক্ষুধা নির্মূল করা, স্থিতিশীল কৃষিকে উৎসাহিত করা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের প্রচার করা, খাদ্য অপচয় হ্রাস করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে বিশ্ব খাদ্য দিবসের থিম হল : ‘Hand in Hand for Better Foods and a Better Future’।
যেসব আহার্য সামগ্রী গ্রহণ করলে আমাদের দেহের বৃদ্ধি, পুষ্টি, শক্তি উৎপাদন, ক্ষয়পূরণ হয় ও রোগ প্রতিরোধ করে তাকে খাদ্য (Food) বলে। আমাদের দেহে শক্তির প্রধান উৎস হল খাদ্য। খাদ্যে ৬ টি উপাদান থাকে — শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট (Carbohydrate), আমিষ বা প্রোটিন (Protein), স্নেহপদার্থ বা ফ্যাট (Fat), খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন (Vitamin), খনিজ পদার্থ (Mineral) এবং জল (Water)। কার্যকারিতা অনুসারে, খাদ্য প্রধানত ২ প্রকার (১) দেহ-পরিপোষক খাদ্য : যেসব খাদ্য দেহের গঠন, বৃদ্ধি ও শক্তি উৎপাদনে সহায়ক, তাদের দেহ-পরিপোষক খাদ্য বলে। যেমন : শর্করা, প্রোটিন ও স্নেহপদার্থ। (২) দেহ-সংরক্ষক খাদ্য : যেসব খাদ্য দেহকে রোগ সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে, শক্তি উৎপাদনে সহায়ক নয়, তাদের দেহ-সংরক্ষক খাদ্য বলে। যেমন : ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও জল। আমাদের দেহে খাদ্যের প্রধান কাজগুলি হল — (১) দেহের বৃদ্ধি এবং দেহের উপাদান সুরক্ষা (২) দেহকোষের ক্ষয় পূরণ ও শক্তির জোগান (৩) রোগ-জীবাণুর হাত থেকে দেহকে রক্ষা করা।
কোনো দেশের নাগরিকদের অন্যতম মৌলিক চাহিদা হল খাদ্য। গত কয়েক দশকে পৃথিবীতে চাষযোগ্য জমি সংরক্ষণ, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, কৃত্রিম বনায়ন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কর্মকান্ডের মাধ্যমে পৃথিবীর সকল দেশ, বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলি খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে কাজ করে চলেছে। বর্তমান কালে পৃথিবীতে বিশ্ব উষ্ণায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যের একটি। খাদ্যের লভ্যতা এবং মানুষের খাদ্য ব্যবহারের অধিকারই হল খাদ্য নিরাপত্তা (Food Security)। খাদ্য নিরাপত্তা হল এমন এক অবস্থা, যেখানে সকলের জন্য সবসময় পর্যাপ্ত, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের শারীরিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিগমন সুনিশ্চিত হয়, যা একটি সক্রিয় ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয়। খাদ্য নিরাপত্তার মূল দিকগুলি হল — (১) পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য সবার জন্য সহজলভ্য হওয়া (২) খাদ্য ক্রয় বা সংগ্রহ করতে অর্থনৈতিক ও শারীরিক সামর্থ্য থাকা (৩) সঠিকভাবে প্রস্তুত, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং সংরক্ষণ করা (৪) খাদ্যের গুণগত মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা (৫) পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সুনিশ্চিত করা।
Pingback: World Statistics Day - ভূগোলিকা-Bhugolika