International Day for Disaster Risk Reduction
আন্তর্জাতিক বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাস দিবস (International Day for Disaster Risk Reduction)

আজ ১৩ ই অক্টোবর (13 October), আন্তর্জাতিক বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাস দিবস (International Day for Disaster Risk Reduction)। প্রতি বছর ১৩ ই অক্টোবর তারিখটি আন্তর্জাতিক বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাস দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় বুধবার আন্তর্জাতিক বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাস দিবস হিসাবে গৃহীত হয় এবং ১৯৮৯ সালে প্রথমবার আন্তর্জাতিক বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাস দিবস পালিত হয়। ২০০৯ সালে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক আন্তর্জাতিক বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাস দিবস রূপে গৃহীত হয় এবং ২০০৯ সাল থেকে প্রতি বছর ১৩ ই অক্টোবর তারিখটি আন্তর্জাতিক বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাস পালিত হয়। আন্তর্জাতিক বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাস দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : প্রতিক্রিয়া থেকে সক্রিয় পদক্ষেপের দিকে মনোনিবেশ করে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ঝুঁকি ও বিপর্যয় প্রস্তুতির বিশ্বব্যাপী সংস্কৃতি প্রচার করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাস দিবসের থিম হল : ‘Fund Resilience, Not Disasters’।
পরিবেশ বিদ্যাতে দুর্যোগ ও বিপর্যয় (Hazard & Disaster) বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দুর্যোগ (Hazard) হল প্রাকৃতিক কারণে সৃষ্ট অপ্রত্যাশিত বা দৈবঘটনা বা বিপজ্জনক অবস্থা। রাষ্ট্রসংঘের সংজ্ঞা অনুসারে, দুর্যোগ হল প্রাকৃতিক ও মানবিক কার্যাবলীর দ্বারা সৃষ্ট এমন ঘটনাবলী, যার মাধ্যমে জীবন ও সম্পত্তিহানি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি অথবা পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতি ঘটে। অন্যদিকে, বিপর্যয় (Disaster) হল প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট কারণে সংঘটিত কোনো চরম ঘটনা বা দুর্যোগ, যা মানুষের সহ্যের সীমা অতিক্রম করে জীবনহানি ও সম্পত্তিহানি ঘটায় এবং পরিবেশগত গুণগতমানের অবনমন ঘটে। অর্থাৎ বিপর্যয় হল দুর্যোগের ফল বা পরিণতি। বিপর্যয়কে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায় — অপার্থিব বিপর্যয় (যেমন : উল্কাপাত, সৌরঝড় ইত্যাদি) এবং পার্থিব বিপর্যয় (যেমন : ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি)। পার্থিব বিপর্যয় আবার প্রধানত তিন প্রকার — (১) প্রাকৃতিক বিপর্যয় (যেমন : অগ্ন্যুৎপাত, সুনামি ইত্যাদি) (২) আধা প্রাকৃতিক বিপর্যয় (যেমন : বন্যা, ভূমিধ্বস ইত্যাদি) এবং (৩) মানবসৃষ্ট বিপর্যয় (যেমন : জনবিস্ফোরণ, পারমাণবিক বিস্ফোরণ ইত্যাদি)।
উল্লেখ্য, Emergency Events Database (EM-DAT) প্রদত্ত তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে সারা বিশ্বে ৩৯৩ টি প্রাকৃতিক দুর্যোগ-সম্পর্কিত বিপর্যয়ের ঘটনা নথিবদ্ধ করা হয়েছে। এই ঘটনাগুলিতে ১৬,৭৫৩ জন নিহত এবং ১৬৭.২ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ২০২৪ সালে বিপর্যয়ের কারণে মোট অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি (প্রত্যক্ষ) -এর পরিমাণ ২৪১.৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। রাষ্ট্রসংঘের তথ্য (২০২৫) অনুসারে, পরোক্ষ ও বাস্তুতন্ত্রের প্রভাব অন্তর্ভুক্ত করলে মোট বিপর্যয়ের ক্ষয়ক্ষতি বর্তমানে বার্ষিক ২.৩ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে (সূত্র : Global Assessment Report on Disaster Risk Reduction ২০২৫)। বন্যাজনিত মৃত্যুর এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির বেশিরভাগই এশিয়া মহাদেশে ঘটেছে। গত ২০ বছরে নথিবদ্ধকৃত খরার সংখ্যা ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধুমাত্র ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গড় বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ১১৯.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
Pingback: International Day of Rural Women - ভূগোলিকা-Bhugolika