International Literacy Day
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস (International Literacy Day)
আজ ৮ ই সেপ্টেম্বর (8 September), আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস (International Literacy Day)। প্রতি বছর ৮ ই সেপ্টেম্বর তারিখটি আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালের ৮ থেকে ১৯ শে সেপ্টেম্বর ইরানের তেহরান শহরে নিরক্ষরতা দূরীকরণের উপর শিক্ষামন্ত্রীদের বিশ্ব সভা (World Congress of Ministers of Education on the Eradication of Illiteracy) অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬৬ সালের ২৬ শে অক্টোবর ইউনেস্কো (UNESCO) ৮ ই সেপ্টেম্বর তারিখটি (অর্থাৎ যে তারিখে নিরক্ষরতা দূরীকরণের উপর শিক্ষামন্ত্রীদের বিশ্ব সভা-১৯৬৫ এর সূচনা হয়েছিল) আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। ১৯৬৭ সালের ৮ ই সেপ্টেম্বর প্রথমবার আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালিত হয়। আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : ব্যক্তি ও সমাজের জন্য সাক্ষরতার গুরুত্ব সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি করা, নিরক্ষরতা দূরীকরণে প্রচেষ্টা জোরদার করা, সাক্ষরতাকে মানবাধিকার ও মানবিক মর্যাদার ভিত্তি হিসেবে প্রচার করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের থিম হল : ‘Promoting literacy in the digital era’।
সাক্ষরতা (Literacy) -এর আভিধানিক অর্থ হল সাক্ষরতা হল অক্ষর পরিচিতি, লেখা ও পড়ার ক্ষমতা। সাধারণ অর্থে সাক্ষরতা বলতে বোঝায় রচনামূলক লেখাপড়া, শিক্ষা ও গবেষণা, নৃতাত্ত্বিক ভাষাগত দক্ষতা। আধুনিক যুগে সাক্ষরতার অর্থ বিস্তৃত হয়েছে এবং তথ্য, প্রযুক্তি ও আর্থিক বিষয়গুলিও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সাক্ষরতা একটি মৌলিক অধিকার এবং সামাজিক উন্নয়নের চাবিকাঠি। ইউনেস্কো (২০১৮) প্রদত্ত সাক্ষরতার সংজ্ঞা হল — ‘বিভিন্ন প্রেক্ষাপটের সাথে সম্পর্কিত মুদ্রিত এবং লিখিত উপকরণ ব্যবহার করে শনাক্তকরণ, বোঝার, ব্যাখ্যা করার, তৈরি করার, যোগাযোগ করার এবং গণনা করার ক্ষমতা।’ ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা সমিতি (International Literacy Association) প্রদত্ত সাক্ষরতার সংজ্ঞা হল — ‘বিভিন্ন শাখায় এবং যেকোনো প্রেক্ষাপটে দৃশ্যমান, শ্রবণযোগ্য এবং ডিজিটাল উপকরণ ব্যবহার করে শনাক্তকরণ, বোঝার, ব্যাখ্যা করার, তৈরি করার, গণনা করার এবং যোগাযোগ করার ক্ষমতা।’ সাক্ষরতা প্রধানত দুই প্রকার — প্রাথমিক সাক্ষরতা (Primary Literacy) এবং কার্যকরী সাক্ষরতা (Functional Literacy)। বর্তমানে বিভিন্ন প্রকার সাক্ষরতার ধারণা বিকশিত হয়েছে। যেমন — কম্পিউটার সাক্ষরতা (Computer Literacy), আর্থিক সাক্ষরতা (Financial Literacy), স্বাস্থ্য সাক্ষরতা (Health Literacy), গণমাধ্যম সাক্ষরতা (Media Literacy), রাজনৈতিক সাক্ষরতা (Political Literacy) ইত্যাদি।
ইউনেস্কো প্রদত্ত তথ্য (২০১৯) অনুসারে, বৈশ্বিক সাক্ষরতা হার (১৫ বছর বা তার বেশি বয়স্ক জনসংখ্যা) ৮৬.৩%। বৈশ্বিক পুরুষ সাক্ষরতা হার (১৫ বছর বা তার বেশি বয়স্ক জনসংখ্যা) ৯০.০% এবং বৈশ্বিক নারী সাক্ষরতা হার (১৫ বছর বা তার বেশি বয়স্ক জনসংখ্যা) ৮২.৭%। বিশ্বে উচ্চ সাক্ষরতা হারযুক্ত কয়েকটি দেশ হল — অ্যান্ডোরা (১০০%), গ্রিনল্যান্ড (১০০%), নরওয়ে (১০০%), ফিনল্যান্ড (১০০%), লুক্সেমবার্গ (১০০%) ইত্যাদি। বিশ্বে নিম্ন সাক্ষরতা হারযুক্ত কয়েকটি দেশ হল — চাদ (২৭%), মালি (৩১%), বুরকিনা ফাসো (৩৪%), দক্ষিণ সুদান (৩৪.৫%), নাইজার (৩৮%) ইত্যাদি। ২০১১ জনগণনা অনুসারে, ভারতের সাক্ষরতা হার ৭৪.০৪%। ২০১১ জনগণনা অনুসারে, ভারতে পুরুষ সাক্ষরতা হার ৮২.১৪% এবং নারী সাক্ষরতা হার ৬৫.৪৬%। ২০১১ জনগণনা অনুসারে, ভারতের সর্বাধিক সাক্ষরতা হারযুক্ত রাজ্য হল কেরালা (৯৪.০০%) এবং সর্বনিম্ন সাক্ষরতা হারযুক্ত রাজ্য হল বিহার (৬১.৮০%)।
Pingback: International Day of Democracy - ভূগোলিকা-Bhugolika