World Refugee Day
বিশ্ব শরণার্থী দিবস (World Refugee Day)
আজ ২০ শে জুন (20 June), বিশ্ব শরণার্থী দিবস (World Refugee Day), যা বিশ্ব উদ্বাস্তু দিবস নামেও পরিচিত। প্রতি বছর ২০ শে জুন তারিখটি বিশ্ব শরণার্থী দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের ১৪ ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রসংঘ শরণার্থী-বিষয়ক হাইকমিশনার (UNHCR) নামক আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠিত হয়। ১৯৫১ সালের ২৮ শে জুলাই সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে শরণার্থী চুক্তি-১৯৫১ (1951 Refugee Convention) শীর্ষক বহুপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০০১ সালে এই চুক্তির সুবর্ণ জয়ন্তী (৫০-তম বর্ষপূর্তি) উপলক্ষে ২০০০ সালের ৪ ঠা ডিসেম্বর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০ শে জুন তারিখটি বিশ্ব শরণার্থী দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। ২০০১ সালের ২০ শে জুন প্রথমবার বিশ্ব শরণার্থী দিবস পালিত হয়। বিশ্ব শরণার্থী দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : বিশ্বব্যাপী শরণার্থীদের দুর্দশা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, শরণার্থীদের সামর্থ্য ও সক্ষমতা উদযাপন করা, শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতি পরিবেশ গড়ে তোলা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীতে শরণার্থীদের অন্তর্ভুক্তির প্রচার করা৷ এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে বিশ্ব শরণার্থী দিবসের থিম হল : ‘Solidarity with Refugees’।
UNHCR -এর সংজ্ঞা অনুসারে, সংঘাত, সহিংসতা বা নির্যাতনের কারণে নিজ দেশ থেকে পলায়নকারী এবং অন্য দেশে আশ্রয় চাওয়া ব্যক্তিকে শরণার্থী বা উদ্বাস্তু (Refugee) বলে। বৃহত্তর অর্থে, একজন ব্যক্তি যখন উপলদ্ধি করেন জাতিগত সহিংসতা, ধর্মীয় উন্মাদনা, জাতীয়তাবোধ, রাজনৈতিক আদর্শ, যুদ্ধ ও অন্যান্য সহিংসতার কারণে তিনি নিজ দেশে নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কিংবা নিজ দেশে ব্যাপক ভয়-ভীতিকর পরিবেশ বিদ্যমান ও রাষ্ট্র তাকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, তখন তিনি শরণার্থী হিসাবে বিবেচিত হন। ১৯৫১ সালের শরণার্থী চুক্তি অনুসারে, একজন শরণার্থী যেসব অধিকার লাভ করেন, সেগুলি হল — কিছু নির্দিষ্ট সংজ্ঞায়িত শর্ত ব্যতীত বহিষ্কার না হওয়ার অধিকার ; চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্রের ভূখন্ডে অবৈধ প্রবেশের জন্য শাস্তি না পাওয়ার অধিকার ; কর্মের অধিকার ; বাসস্থানের অধিকার ; শিক্ষার অধিকার ; জনসাধারণের ত্রাণ ও সহায়তার অধিকার ; ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার ; আদালতে প্রবেশ অধিকার ; চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্রের মধ্যে বিচলনের স্বাধীনতার অধিকার ; পরিচয়পত্র ও ভ্রমণ নথির অধিকার।
UNHCR -এর তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের শেষে বিশ্বব্যাপী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ১২৩.২ মিলিয়ন। অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৭৩.৫ মিলিয়ন (সূত্র : IDMC)। শরণার্থীর সংখ্যা ৩৬.৮ মিলিয়ন। আশ্রয়প্রার্থী (Asylum-Seekers) -এর সংখ্যা ৮.৪ মিলিয়ন। আন্তর্জাতিক সুরক্ষার প্রয়োজন-সহ অন্যান্য ব্যক্তির সংখ্যা ৫.৯ মিলিয়ন। উল্লেখ্য, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের প্রায় ৪০% (৪৯ মিলিয়ন) -এর বয়স ১৮ বছরের নিচে। মোট শরণার্থী ও আন্তর্জাতিক সুরক্ষার প্রয়োজন-সহ অন্যান্য ব্যক্তির ৬৭% প্রতিবেশী দেশগুলিতে বসবাস করছে। UNHCR -এর তথ্য অনুসারে, বর্তমানে মোট শরণার্থী ও আন্তর্জাতিক সুরক্ষার প্রয়োজন-সহ অন্যান্য ব্যক্তির ৬৯% ৫ টি দেশ (ভেনেজুয়েলা, সিরিয়া, আফগানিস্তান, ইউক্রেন, দক্ষিণ সুদান) থেকে উদ্ভূত হয়েছে এবং মোট শরণার্থী ও আন্তর্জাতিক সুরক্ষার প্রয়োজন-সহ অন্যান্য ব্যক্তির ৩৭% ৫ টি দেশ (ইরান, তুরস্ক, কলম্বিয়া, জার্মানি, উগান্ডা) -এ আশ্রয় নিয়েছে।
Pingback: World Hydrography Day - ভূগোলিকা-Bhugolika