International Tea Day
আন্তর্জাতিক চা দিবস (International Tea Day)
আজ ২১ শে মে (21 May), আন্তর্জাতিক চা দিবস (International Tea Day)। প্রতি বছর ২১ শে মে তারিখটি আন্তর্জাতিক চা দিবস রূপে পালিত হয়। উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ড সোস্যাল ফোরাম (World Social Forum) -এর ২০০৪ সাল (ভারতের মুম্বাইয়ে, ১৬-২১ শে জানুয়ারি) এবং ২০০৫ সাল (ব্রাজিলের পোর্টো অ্যালিগ্রে-তে, ২৬-৩১ শে জানুয়ারি) বার্ষিক সভাতে ১৫ ই ডিসেম্বর তারিখটি আন্তর্জাতিক চা দিবস হিসাবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ২০০৫ সালের ১৫ ই ডিসেম্বর তারিখে প্রথমবার আন্তর্জাতিক চা দিবস পালিত হয়। ২০১৯ সালের ১৯ শে ডিসেম্বর তারিখে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ ২১ শে মে তারিখটি আন্তর্জাতিক চা দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। রাষ্ট্রসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) -এর উদ্যোগে ২০২০ সালের ২১ শে মে তারিখে প্রথমবার আন্তর্জাতিক চা দিবস পালিত হয়। আন্তর্জাতিক চা দিবস পালনের লক্ষ্য হল বিশ্বজুড়ে চায়ের দীর্ঘ ইতিহাস ও গভীর সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক তাৎপর্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। আন্তর্জাতিক চা দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : চায়ের স্থিতিশীল উৎপাদন ও ব্যবহারের পক্ষে কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চায়ের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক চা দিবসের থিম হল : ‘Tea for Better Lives’।
চা (Tea) হল সুগন্ধযুক্ত ও স্বাদবিশিষ্ট এক ধরনের উষ্ণ পানীয়, যা চা পাতা থেকে তৈরি করা হয়। চা গাছ (Tea Plant) থেকে চা পাতা পাওয়া যায়। চা গাছ হল থিয়েসি (Theaceae) পরিবারের ক্যামেলিয়া (Camellia) গণের অন্তর্গত একপ্রকার চিরসবুজ উদ্ভিদ। চা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যামেলিয়া সাইনেনসিস (Camellia sinensis)। বন্য চা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যামেলিয়া টালিয়েনসিস (Camellia taliensis)। চা হল ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলের পার্বত্য ও উচ্চভূমির ফসল। চায়ের আদি জন্মভূমি হল চিন। চা হল বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় পানীয় ফসল। চা রপ্তানি করে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হয়, তাই চা ‘সোনালী পানীয়‘ (Golden Beverage) নামে পরিচিত। প্রস্তুতকরণ প্রক্রিয়া অনুসারে চা-কে মূলত পাঁচটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায় — (১) কালো চা (Black Tea), (২) সবুজ চা (Green Tea), (৩) ইষ্টক চা (Brick Tea), (৪) ওলং চা (Oolong Tea) এবং (৫) প্যারাগুয়ে চা (Paraguay Tea) বা ইয়ারবা মাতে (Yerba Mate)। এছাড়া সাদা চা (White Tea), হলুদ চা (Yellow Tea), পু’য়ের চা (Pu’er Tea) ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার চা পাওয়া যায়।
FAO -এর তথ্য (২০২৪) অনুসারে, বিশ্বে চা উৎপাদনে চিন প্রথম স্থান অধিকার করে। ভারত ও কেনিয়া যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এছাড়া বিশ্বের উল্লেখযোগ্য চা উৎপাদক দেশগুলি হল — শ্রীলঙ্কা, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, আর্জেন্টিনা, উগান্ডা ইত্যাদি। বিশ্বে চা রপ্তানিতে চিন, কেনিয়া ও শ্রীলঙ্কা যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে। চায়ের অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। চা-তে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। চা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। চা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। চা হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। চা মানসিক অবসাদ ও হতাশা দূর করতে, শরীর ও মনকে প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। চা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
Pingback: International Day for Biological Diversity - ভূগোলিকা-Bhugolika