World Heritage Day
বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস (World Heritage Day)
আজ ১৮ ই এপ্রিল (18 April), বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস (World Heritage Day)। প্রতি বছর ১৮ ই এপ্রিল তারিখটি বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস রূপে পালিত হয়। এই দিবস আন্তর্জাতিক স্মৃতিচিহ্ন ও স্থল দিবস (International Day for Monuments and Sites) নামেও পরিচিত। উল্লেখ্য, ১৯৬৪ সালকে ইউনেস্কো (UNESCO) আন্তর্জাতিক স্মৃতিচিহ্ন বর্ষ (International Year of the Monument) হিসাবে ঘোষণা করে। ১৯৬৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন মনুমেন্টস্ অ্যান্ড সাইটস্ (International Council on Monuments and Sites/ICOMOS) সংস্থাটি গঠিত হয়। ১৯৮২ সালে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন মনুমেন্টস্ অ্যান্ড সাইটস্ (ICOMOS) ১৮ ই এপ্রিল তারিখটি বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। ১৯৮৩ সালে প্রথমবার বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস পালিত হয়। ১৯৮৩ সালের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ২২-তম সাধারণ সম্মেলনে ১৮ ই এপ্রিল তারিখটি বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে। বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও স্মৃতিচিহ্নের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং সেগুলি সংরক্ষণ করা। এবছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে বিশ্ব ঐতিহ্য দিবসের থিম হল : ‘Heritage under Threat from Disasters and Conflicts: Preparedness and Learning from 60 years of ICOMOS Actions’।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের ২৩ শে নভেম্বর স্বাক্ষরিত ইউনেস্কোর ‘বিশ্ব ঐতিহ্য সম্মেলন‘ (World Heritage Convention) আন্তর্জাতিক চুক্তি প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুসারে, স্মৃতিচিহ্ন (Monuments) হল স্থাপত্যকর্ম, স্মারক ভাস্কর্য ও চিত্রকলা, প্রত্নতাত্ত্বিক প্রকৃতির উপাদান বা কাঠামো, শিলালিপি, গুহা আবাস ও বৈশিষ্ট্যের সংমিশ্রণ, যা ইতিহাস, শিল্পকলা বা বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে অসাধারণ সর্বজনীন মূল্যবান। বিশ্বজুড়ে মানবতার জন্য অসামান্য মূল্যবান হিসাবে বিবেচিত প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ১৯৭৮ সালে ইউনেস্কো ‘বিশ্ব ঐতিহ্য স্থল‘ (World Heritage Site) মর্যাদা প্রদান শুরু করে৷ বর্তমানে (০১/০১/২০২৫), সারা বিশ্বে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য স্থলের সংখ্যা ১২২৩, যার মধ্যে ২৩১ টি প্রাকৃতিক, ৯৫২ টি সাংস্কৃতিক ও ৪০ টি মিশ্র শ্রেণীভুক্ত। বর্তমানে (০১/০১/২০২৫) ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য স্থলের সংখ্যা অনুসারে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ইতালি (৬০ টি), চিন (৫৯ টি) ও জার্মানি (৫৪ টি)।
বর্তমানে (০১/০১/২০২৫), ভারতে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য স্থলের সংখ্যা হল ৪৩ টি। যার মধ্যে ৭ টি প্রাকৃতিক (Natural), ৩৫ টি সাংস্কৃতিক (Cultural) ও ১ টি মিশ্র (Mixed) শ্রেণীভুক্ত। ভারতের প্রাকৃতিক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থলগুলি হল — (১) কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান (১৯৮৫), (২) কেওলাদেও জাতীয় উদ্যান (১৯৮৫), (৩) মানস বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য (১৯৮৫), (৪) সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান (১৯৮৭), (৫) নন্দাদেবী এবং ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স জাতীয় উদ্যান (১৯৮৮ ও ২০০৫), (৬) পশ্চিমঘাট পর্বত (২০১২), (৭) গ্রেট হিমালয়ান জাতীয় উদ্যান (২০১৪)। ভারতের সাংস্কৃতিক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থলগুলি হল — (১) আগ্রা দুর্গ (১৯৮৩), (২) অজন্তা গুহা (১৯৮৩), (৩) ইলোরা গুহা (১৯৮৩), (৪) তাজমহল (১৯৮৩), (৫) মহাবলীপুরমে স্মারকসমূহ (১৯৮৪), (৬) কোনার্ক সূর্য মন্দির (১৯৮৪), (৭) ফতেপুর সিক্রি (১৯৮৬), (৮) হাম্পিতে স্মারকসমূহ (১৯৮৬), (৯) খাজুরাহো স্মারকসমূহ (১৯৮৬), (১০) গোয়ার চার্চ ও মঠসমূহ (১৯৮৬), (১১) এলিফ্যান্টা গুহা (১৯৮৭), (১২) পত্তদকলে স্মারকসমূহ (১৯৮৭), (১৩) মহান চোল মন্দিরসমূহ (১৯৮৭ ও ২০০৪), (১৪) সাঁচীতে বৌদ্ধ স্মারকসমূহ (১৯৮৯), (১৫) হুমায়ুনের সমাধি (১৯৯৩), (১৬) কুতুব মিনার এবং এর স্মারকসমূহ (১৯৯৩), (১৭) ভারতের পার্বত্য রেলপথ (১৯৯৯, ২০০৫ ও ২০০৮), (১৮) মহাবোধি মন্দির চত্বর (২০০২), (১৯) ভীমবেটকার প্রস্তর আশ্রয়স্থলসমূহ (২০০৩), (২০) ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস (২০০৪), (২১) চম্পানের-পাবাগড় প্রত্নতাত্ত্বিক উদ্যান (২০০৪),(২২) লালকেল্লা চত্বর (২০০৭), (২৩) জয়পুরের যন্তর মন্তর (২০১০), (২৪) রাজস্থানের পার্বত্য দূর্গসমূহ (২০১৩), (২৫) রাণী-কি-বাব (২০১৪), (২৬) নালন্দা মহাবিহার প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান (২০১৬), (২৭) চন্ডীগড়ে লি কার্বুজিয়ের স্থাপত্যকর্ম (২০১৬), (২৮) আমেদাবাদের ঐতিহাসিক শহর (২০১৭), (২৯) মুম্বাইয়ের ভিক্টোরিয়ান গোথিক ও আর্ট ডেকো স্থাপত্য সমাহার (২০১৮), (৩০) রাজস্থানের জয়পুর শহর (২০১৯), (৩১) ঢোলাভিরা (২০২১), (৩২) কাকতীয় রুদ্রেশ্বর (রামপ্পা) মন্দির (২০২১), (৩৩) হোয়সলের পবিত্র স্থাপত্য-সমাহার (২০২৩), (৩৪) শান্তিনিকেতন (২০২৩), (৩৫) অসমের মৈদাম (২০২৪)। ভারতের একমাত্র মিশ্র বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থল হল — কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যান (২০১৬)।
Pingback: Chinese Language Day - ভূগোলিকা-Bhugolika
Informative