World Day for Glaciers
বিশ্ব হিমবাহ দিবস (World Day for Glaciers)
আজ ২১ শে মার্চ (21 March), বিশ্ব হিমবাহ দিবস (World Day for Glaciers)। ২০২২ সালের ১৪ ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০২৫ সালকে হিমবাহ সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক বর্ষ (International Year of Glaciers’ Preservation) হিসাবে ঘোষণা করে এবং ২০২৫ সাল থেকে প্রতি বছর ২১ শে মার্চ তারিখটি বিশ্ব হিমবাহ দিবস রূপে পালনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। ২০২৫ সালের ২১ শে মার্চ তারিখে প্রথমবার বিশ্ব হিমবাহ দিবস পালিত হয়। বিশ্ব হিমবাহ দিবস পালনের উদ্দেশ্য হল : পৃথিবীর জলবায়ু ব্যবস্থা ও জলচক্রে হিমবাহ, তুষার ও বরফের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং তাদের সংরক্ষণ ও স্থিতিশীল ব্যবস্থাপনার জন্য বিশ্বব্যাপী পদক্ষেপকে উৎসাহিত করা। ২০২৫ সালে বিশ্ব হিমবাহ দিবসের থিম হল : ‘হিমবাহ সংরক্ষণ’ (Glaciers’ Preservation)।
উল্লেখ্য, ধীরগতিসম্পন্ন চলমান বিশাল আকারের বরফের স্তূপকে হিমবাহ (Glacier) বলে। প্রকৃতপক্ষে, হিমবাহ হল ধীরগতিসম্পন্ন বরফের নদী। ১৯৪৮ সালে সুইডিশ হিমবাহ বিশেষজ্ঞ এইচ. ডবলিউ. অ্যালম্যান (Hans Wilhelmsson Ahlmann) অবস্থান অনুসারে সর্বপ্রথম হিমবাহের শ্রেণীবিভাগ করেন। অ্যালম্যান (১৯৪৮) শ্রেণীবিভাগ অনুসারে, হিমবাহ প্রধানত ৩ প্রকার — (১) মহাদেশীয় হিমবাহ (Continental Glacier) : যেসব হিমবাহ উচ্চ অক্ষাংশে মহাদেশব্যাপী বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে অবস্থান করে, তাদের মহাদেশীয় হিমবাহ বলে। উদাহরণ — আন্টার্কটিকার ল্যামবার্ট হিমবাহ (পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশীয় হিমবাহ) (২) পার্বত্য/উপত্যকা হিমবাহ (Mountain/Valley Glacier) : যেসব হিমবাহ উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাদের পার্বত্য/উপত্যকা হিমবাহ বলে। উদাহরণ — আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার হুবার্ড হিমবাহ (পৃথিবীর বৃহত্তম পার্বত্য/উপত্যকা হিমবাহ) (৩) পাদদেশীয় হিমবাহ (Piedmont Glacier) : যেসব হিমবাহ পর্বতের পাদদেশে অবস্থান করে, তাদের পাদদেশীয় হিমবাহ বলে। উদাহরণ — আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার মালাসপিনা হিমবাহ (পৃথিবীর বৃহত্তম পাদদেশীয় হিমবাহ)।
উল্লেখ্য, পৃথিবীর দীর্ঘতম হিমবাহ (World’s Longest Glacier) হল আন্টার্কটিকার ল্যামবার্ট হিমবাহ (দৈর্ঘ্য ৪০০ কিমি)। পৃথিবীর দ্রুততম হিমবাহ (World’s Quickest Glacier) হল গ্রিনল্যান্ডের জ্যাকবসভ্যান হিমবাহ (গড় বার্ষিক গতিবেগ ৪৫ মিটার/দিন)। বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর হিমবাহগুলি বর্তমানে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের তথ্যমতে, আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীর বর্তমান হিমবাহগুলির এক-তৃতীয়াংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। বৈশ্বিক সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির এক প্রধান কারণ হল হিমবাহ গলন। উল্লেখ্য, পৃথিবীর ২০০ কোটিরও বেশি মানুষ স্বাদুজলের উৎস হিসাবে হিমবাহ ও তুষার গলনের ওপর নির্ভর করে। তাই, বিশ্ব হিমবাহ দিবসের লক্ষ্য হল পৃথিবীজুড়ে হিমবাহ সংরক্ষণ, যা জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
Pingback: World Water Day - ভূগোলিকা-Bhugolika
দারুন